কয়েকদিন আগে ব্যবসায়িক কাজে সিলেটে যাচ্ছিলেন ভাইয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মারুফ সাত্তার আলী রাসেল। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ডোমেস্টিক টার্মিনালে পৌঁছানোর পথে হঠাৎ ঝুম বৃষ্টিতে তাঁর গাড়ি কয়েক মুহূর্তে জমে ওঠা পানিতে আটকে যায়। চোখের পলকে রাস্তা যেন ছোট নদীতে পরিণত হয়। বিএমডব্লিউ গাড়িটি ডুবে গেলে তিনি বাধ্য হয়ে গাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে থাকেন। চালক ও বডিগার্ড উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও প্রবল স্রোতের কারণে ফ্লাইট ধরা সম্ভব হয়নি। কয়েক মিনিটের বৃষ্টিতে ঘটে যাওয়া এই দৃশ্যের ভিডিও ও ছবি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
মারুফ সাত্তার আলীর মতে, এই অভিজ্ঞতা শুধু ব্যক্তিগত দুর্ভোগ নয়, বরং দেশের অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জের প্রতীক। অল্প বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে যাওয়া যেন মনে করিয়ে দেয়—পরিকল্পনা ও উদ্যোগ ছাড়া দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
ঠিক এই প্রেক্ষাপটে, রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ভাইয়া হোটেলস আয়োজিত ‘সল্ট বে কিডস ফেস্ট’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি নতুন সূচনার আহ্বান জানান। বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর আগে। কিন্তু সিঙ্গাপুর, দুবাই, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলো ট্যুরিজম খাতে অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট, শ্রমিকরা সেই দেশে কাজ করছে। ৫ আগস্টের পর দেশ যেন নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। এখনই সময় নতুন করে শুরু করার, যাতে আগামী ৫০ বছর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে। ইনশাল্লাহ, আমরা এগিয়ে যাব।”
ট্যুরিজম খাতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার গভীর ইচ্ছা পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার। আগামী ১০–১৫ বছরের মধ্যে ভাইয়া হোটেলস, ভাইয়া হাউজিং ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিজকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, যা সিঙ্গাপুর, দুবাই, ব্যাংককের পর্যায়ে দাঁড়াবে।”
তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে—ছোট নদীতে আটকে পড়া অভিজ্ঞতা যেমন সতর্কবার্তা, তেমনই দেশের ট্যুরিজম খাতে সাহসী উদ্যোগেরও প্রেরণা। শুধু পরিকল্পনা নয়, দরকার দৃঢ় সংকল্প ও বাস্তবায়ন।
বৃষ্টিতে আটকে পড়া সেই মুহূর্ত আজ প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে—সমস্যা ও বাধা থাকবে, কিন্তু সঠিক উদ্যোগে এগিয়ে গেলে উন্নয়ন থেমে থাকে না। পর্যটন, ব্যবসা, শিল্প—সব ক্ষেত্রেই পরিকল্পনার পাশাপাশি উদ্যমী নেতৃত্ব অপরিহার্য।
বিডি প্রতিদিন/আশিক