কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের গুরুত্বপূর্ণ শৈবাল পয়েন্ট। পর্যটন করপোরেশনের মোটেল শৈবালের পশ্চিমে এ পয়েন্টটি ঐতিহ্যবাহী পয়েন্ট। এখানে সাগর ঘেঁষে গড়ে ওঠে পর্যটকদের সুুযোগসুবিধার জন্য ওয়াশরুম, চেঞ্জিং রুমসহ কিছু স্থাপনা। কয়েক দিন আগে সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে এসব স্থাপনা। শুধু শৈবাল পয়েন্ট নয়, সাগরের আগ্রাসি ঢেউয়ের লাগাতার আঘাতে বিলীন হয়ে গেছে সৈকতের বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি। উপড়ে পড়েছে শত শত ঝাউ গাছ এবং সৈকতের পুলিশ বক্স, লকারসহ অনেক স্থাপনা। সমুদ্রসৈকতের বিচকর্মী ও লাইফগার্ড সদস্যরা জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে সৈকতের লাবণী, শৈবাল, ডায়াবেটিক পয়েন্টের বালিয়াড়ীতে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। আগে উপকূল থেকে সাগরের মধ্যে আধা কিলোমিটারের মতো বালিয়াড়ী ছিল। যাতে সাগরলতাসহ সমুদ্রের বিভিন্ন উদ্ভিদ জন্মাত। এসব উদ্ভিদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠত বালিয়াড়ীর পাহাড়। কিন্তু কয়েক দিনের সমুদ্রের টেউয়ের তাণ্ডবে সব বিলীন হয়ে গেছে। ফলে পর্যটকদের বালিতে বসার যে সুযোগ ছিল সেটা নষ্ট হয়ে গেছে। সৌন্দর্য হারিয়েছে সমুদ্রসৈকত। স্থানীয়দের মতে, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গেল কয়েক বছর ধরে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে ডায়াবেটিক পয়েন্ট, শৈবাল পয়েন্টে আধা কিলোমিটারের মতো বালিয়াড়ী সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, সমুদ্রের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাই প্রকৃতির চলমান প্রতিক্রিয়া অব্যাহত থাকলে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ৪০ বছর আগে যে অবস্থায় ছিল ভাঙনের ফলে সেই অবস্থানে চলে যাবে। সেই হিসাবে কক্সবাজার সৈকত ধীরে ধীরে ভেঙে আরও উপকূলের দিকে চলে আসবে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাব ও টুয়াক সভাপতি রেজাউল করিম জানান, ‘ঢেউয়ের তীব্র আঘাতে বিভিন্ন পয়েন্ট পর্যন্ত তীব্র ভাঙন ধরেছে। শৈবাল থেকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয় পর্যন্ত বালিয়াড়ীর প্রস্থে ১০/১২ গজ ও দৈর্ঘে বিশাল অংশ সাগরে বিলীন হয়েছে। শত শত ঝাউগাছ উপড়ে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবেশ সংকটাপন্ন এ এলাকায় প্রতি বছর জিও ব্যাগ বসিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থায়ী সুরক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে একটি প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই প্রকল্প পাস হলে আশা করি এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান মিলবে।’