বগুড়ায় অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে বাবা মো. শাকিল আহমেদ (৪০)-কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বিকালে শহরের ফুলবাড়ী মধ্যপাড়া করতোয়া নদীর ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল শহরের শিববাটি শাহি মসজিদ এলাকার সাজু মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জিতু ইসলামসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার জিতু বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসাধারণ সম্পাদক। নিহতের স্বজনরা জানান, বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলাম কিছুদিন আগে শাকিলের অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় শাকিলের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয় জিতুর। এনিয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। তারই জের ধরে শনিবার বিকালে শাকিলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে মারপিট করে। একপর্যায়ে শাকিল তার বাড়ি থেকে পালিয়ে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে জিতু তার দলবল নিয়ে শাকিলকে বোনের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মারপিট করে করতোয়া নদীর ঘাটে ফেলে রেখে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন শাকিলকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে সন্ধ্যার দিকে তার মৃত্যু হয়। বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল জানান, জিতু জেলা কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক। জিতুর অপরাধের দায় সংগঠন নেবে না। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাসির জানান, এ ঘটনায় জিতু ও মতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিতু এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় সংগঠন থেকে জিতুকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। একই সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল বগুড়া জেলা শাখার সহসাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলামকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। দলের নেতা-কর্মীদের তার সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ না রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো। স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জিতু ইসলামের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।