চলমান অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার অভিযান থেকে কৃষি সেক্টর বিশেষ করে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, খামার, রেস্টুরেন্ট, হোটেলকে এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের এমন একটি অভ্যন্তরীণ ইমেইল সার্কুলারের তথ্য শুক্রবার গণমাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। সার্কুলারটি আইসের (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) আঞ্চলিক পর্যায়ের সব অফিসে পাঠানো হয়েছে।
এ নির্দেশ জারির সংবাদ প্রকাশের পর বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট, হোটেল-মোটেলেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বলে গতকাল সকালে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীর অধিকাংশই কাগজপত্রহীন হলেও অন্য কোনো অপরাধে লিপ্ত নন।
উল্লেখ্য, লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির একটি হোম ডিপোতে গত সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে নির্বিচার অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তারের পর সৃষ্ট আন্দোলন দমাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে সেখানে ন্যাশনাল গার্ড এবং মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হয়। এরপর আন্দোলন আরও চরমে ওঠে যা লস অ্যাঞ্জেলেসের সীমানা ছাড়িয়ে অভিবাসী অধ্যুষিত বেশ কয়েকটি সিটিতে ছড়িয়ে পড়ে। লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির প্রাণ কেন্দ্রে রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। বিক্ষোভের সময় দোকান-অফিসে হামলা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো সহিংসতা রোধে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করা হয়। লস অ্যাঞ্জেলেস সিটির আন্দোলন চলার মধ্যেই নেব্রাস্কায় একটি মাংস প্রক্রিয়াকরণ খামারে হানা দিয়ে বেশ কিছু অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তারের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় খোদ রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেও। পার্টির নেতৃস্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, নির্বাচনি অঙ্গীকার অনুযায়ী অবৈধভাবে বসবাসরতদের মধ্যে কেবল যারা গুরুতর অপরাধী তাদের গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের কথা। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না। নির্বিচার গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে সমগ্র কমিউনিটিতে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। খেত-খামার, গ্রোসারি-রেস্টুরেন্ট-হোটেলের কর্মচারীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এমন অবস্থায় ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়তে পারে সামনের বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির ভোটে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও হোটেল ব্যবসায়ী এবং তাঁর হোটেলের অনেক শ্রমিক অবৈধ অভিবাসী অর্থাৎ তিনিও এমন অভিযানের ভুক্তভোগী হয়েছেন বলে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতেই উপরোক্ত সেক্টরে গ্রেপ্তার অভিযান না চালানোর এ নির্দেশ জারি হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।