জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন যশোর-৩-এ “(সদর উপজেলা ‘বসুন্দিয়া ইউনিয়ন বাদে’)” এবারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী। এরই মধ্যে জামায়াত তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। তিনি হলেন আবদুল কাদের। আর বিএনপি প্রার্থী হিসেবে এখনো মনোনয়ন ঘোষণা না করলেও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম যে প্রার্থী থাকছেন- তা নিশ্চিত। প্রার্থিতা নিয়ে অন্য কোনো দলের তৎপরতা এখনো নেই। বসুন্দিয়া ইউনিয়ন বাদে যশোর সদর উপজেলার বাকি অংশ নিয়ে জেলার আসন যশোর-৩ গঠিত। মূলত এ আসন থেকে জেলার রাজনীতি পরিচালিত হয়। এখান থেকে একসময় নির্বাচন করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটো, আলী রেজা রাজুর মতো নেতারা সংসদ সদস্য হন। এ আসনে গত তিনটি নির্বাচনে সংসদ সদস্য ছিলেন শিল্পপতি আওয়ামী লীগ নেতা কাজী নাবিল আহমেদ। আগামী সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার মতো নেতাদের সবাই এখন পলাতক। এ অবস্থায় শেষ পর্যন্ত এ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। যদিও এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা কতটা শক্ত হবে- তা নিয়ে অনেকের মনেই দ্বিধা আছে। বিএনপি নেতারা অবশ্য বলছেন, তারা সব প্রার্থীকেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ধরে নিয়ে সব প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার নানা সমীকরণ মিলিয়ে জামায়াত নেতারাও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
বিএনপি যদিও এখনো তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেনি, তারপরও এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে যশোর-৩ আসনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতই বিএনপির প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতের কাঁধে পুরো খুলনা বিভাগের দায়িত্ব। সেসব সামাল দিয়েও তার নির্বাচনি এলাকা যশোরের শহর থেকে গ্রাম, পাড়া, মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন প্রতিদিন। অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলছেন, ‘দলের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে দল ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেখবেন।’ তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয়ভাবে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। দেশ পুনর্গঠনে তারেক রহমানের দেওয়া ৩১ দফা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।’
অন্যদিকে জামায়াত এরই মধ্যে যশোর-৩ আসনের প্রার্থী হিসেবে আবদুুল কাদেরের নাম ঘোষণা করেছে। বর্তমান সময়ে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি পরিচিত মুখ না হলেও ১৯৮০-৮১ বর্ষে যশোর এমএম কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রশিবির থেকে ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। গার্মেন্টস উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আবদুল কাদের দীর্ঘদিন দলের ঢাকা-উত্তর শাখার রোকন ছিলেন। তবে এখন তিনি যশোর জেলা জামায়াতের রোকন। আবদুল কাদের বলেন, ‘সবাই আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিকে দেখেছে। তবে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে। সৎ ও যোগ্য, ক্লিন ইমেজের মানুষকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাচ্ছে। এ কারণে আমি জয়ের ব্যাপারে অতিরিক্ত আশাবাদী।’
এদিকে আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে পুরো জেলায় দলীয় প্রস্তুতি সম্পর্কে জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আগামী নির্বাচন কঠিন হবে এবং সব দলের প্রার্থীকে শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, ‘সব আসনেই আমাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তারা নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি গণসংযোগ করছেন।’ তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ দুর্নীতিমুক্ত সৎ মানুষকে তাদের নেতা হিসেবে দেখতে চায়। তাই আমাদের প্রার্থীরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন।’