উজানের ঢল আর অতিবৃষ্টিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে সাড়ে ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিতে ডুবে গেছে রোপা, আমন, ভুট্টাসহ, শাক-সবজি আবাদ করা ৪০৩ হেক্টর জমি। এছাড়া ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
জানা গেছে, উজানের ঢল আর অতিবৃষ্টিতে ৪-৫দিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ও আলাতুলী ইউনিয়ন এবং শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
জনপ্রতিনিধিরা জানান, সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫‘শ পরিবার এবং আলাতুলী ইউনিয়নে ৬‘শ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নে প্রায় ৪৫০ পরিবার, পাঁকা ইউনিয়নে ২ হাজার পরিবার ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছেন।
পাঁকা ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে এবং সেই অঞ্চলে বসবাসকরা মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়া প্রায় ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় সেখানে পাঠদান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত ৪-৫ দিন ধরে এই অবস্থা বিরাজ করছে। অন্যদিকে নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পদ্মায় ভাঙ্গণ দেখা দেওয়ায় নদী তীরবর্তী মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন।
শিবগঞ্জ উপজেলার দুলর্ভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজম আলী বলেন, ইউনিয়নের দোভাগী, ফিল্ডেরহাট, বাদশাপাড়া, নামোজগন্নাথপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলের জমিগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এতে প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তার ইউনিয়নে প্রায় ৫‘শ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এতে করে এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া নিম্নাঞ্চলের আবাদি জমিগুলো ডুবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া জানান, নদীর পানিতে ধান, ভুট্টা ও শাক-সবজিসহ ৩৬০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অপরদিকে সদরের কৃষি কর্মকর্তা আনিসুল হক জানান, পানিতে ৪৩ হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জেছের আলী বলেন, নিম্নাঞ্চলের ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকেছে। এতে করে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে আশপাশের উঁচু জায়গায় শিক্ষার্ধীদের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে ওইসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা প্রস্তুতের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলে যাঁচাই-বাছাই করে তাদের ত্রাণের আওতায় আনা হবে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ