গত মাসে এএফসি নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। এবার বয়সভিত্তিক পর্যায়েও প্রথমবারের মতো চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের বাছাই পর্ব খেলতে লাওসে যাওয়ার আগেই চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন আফঈদা খন্দকাররা। সে স্বপ্ন পূরণ করেছেন তাঁরা। গতকাল ‘এইচ’ গ্রপের দ্বিতীয় দল হিসেবে টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
প্রতিপক্ষ শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু ম্যাচের শুরুর দিকে নিজেদের খেলায় কোনো দুর্বলতা ফুটে উঠতে দেননি বাংলাদেশের মেয়েরা। বরং গোলের সুযোগ তৈরি করে চমকেই দিয়েছিলেন। ১৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। গ্যালারিতে উৎসবে মেতে ওঠেন প্রবাসী বাংলাদেশি সমর্থকরা। সাগরিকা ও শান্তি মারডি নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি বক্সে প্রবেশ করেন। বক্সের বাঁ দিক থেকে শান্তি বল বাড়ান। কোরিয়ান গোলরক্ষকের হাতের নিচ দিয়ে বল সামনে এগিয়ে গেলে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা তৃষ্ণা আলতো টোকায় জালে পাঠান। তবে এরপর আর গোলের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। কোরিয়ার মেয়েরা একের পর এক ৬টি গোল করেন। ৬-১ ব্যবধানে পরাজিত হলেও চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আট গ্রুপের রানার্সআপ দলগুলোর মধ্যে শীর্ষ ৩-এ জায়গা করে নিয়েছেন আফঈদা খন্দকাররা। এতেই নিশ্চিত হয়েছে চূড়ান্ত পর্ব। আগামী বছর এপ্রিলে থাইল্যান্ডে খেলতে যাবে বাংলাদেশ।
বড় লক্ষ্য নিয়েই লাওস যাত্রা করেছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার স্বপ্ন ছিল তাঁদের চোখে। সেই স্বপ্ন পূরণের পথে শুরুতেই তাঁরা পরাজিত করেন স্বাগতিক লাওসকে। ৩-১ গোলের দারুণ সে জয় বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে দেয়। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেন আফঈদা খন্দকাররা। সরাসরি চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ বেড়ে গিয়েছিল টানা দুই জয়ে। তবে তৃতীয় ম্যাচে শক্তিশালী কোরিয়ানদের সঙ্গে আর পারেননি মেয়েরা। বাংলাদেশের সিনিয়র দলের ফিফা র্যাংকিং ১০৪। বিপরীতে দক্ষিণ কোরিয়ান মেয়েদের র্যাংকিং ২১। অবস্থানের বিশাল ব্যবধান খেলার ধরনেও ধরা পড়েছে ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তে। শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। তবে লক্ষ্য পূরণ করেই দেশে ফিরছেন আফঈদারা।
কোরিয়ানদের কাছে পরাজিত হওয়ার পর কিছুটা শঙ্কা ছিল। বাংলাদেশের সে শঙ্কা দূর করে দেয় জাপান ও চীন। ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে চীন ৮-০ গোলে পরাজিত করে লেবাননকে। এ ম্যাচে লেবানন ড্র করলেও বাংলাদেশের চূড়ান্ত পর্বে খেলা হতো না। অন্যদিকে ‘এফ’ গ্রুপের খেলায় ইরানকে ১১-০ গোলে পরাজিত করে জাপান। এ ম্যাচেও ইরান পয়েন্ট পেলে বাংলাদেশের জন্য বিপদ হতে পারত। সব শঙ্কা দূর করেই চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।