ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভুল চিকিৎসায় শাকিবা আক্তার (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার বিকালে পৌর শহরের নতুন বাজারের জমজম হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিবা আক্তার উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের তিনলাখপীর এলাকার বাচ্চু মিয়ার মেয়ে ও পৌর শহরের গংগানগর গ্রামের অহিদ মিয়ার ছেলে সাদেক হোসেনের স্ত্রী। প্রসূতির মৃত্যু টের পেয়ে পালিয়ে যায় হাসপাতালের লোকজন। এ ঘটনায় হাসপাতালে ভাংচুর চালায় প্রসুতির স্বজন ও স্থানীয় জনতা। প্রসূতির স্বামী সাদেক হোসেন জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী শাকিবা আক্তারকে নিয়ে আসেন পৌর শহরের নতুন বাজারের জমজম হাসপাতাল নামের বেসরকারি হাসপাতালে। বাড়ি থেকে আসার সময় সুস্থ ছিল শাকিব আক্তার। হাসপাতালে আনার পরে চিকিৎসকের নির্দেশনায় তাকে প্রায় ৮টি শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক সিজার করানো যাবে বলে জানান। বেলা প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে ওটিতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরে তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। নবজাতককে দেওয়া হয় স্বজনদের কাছে। অপারেশনের আধা ঘণ্টার মধ্যে প্রসূতি শাকিবার দেহ নিথর হয়ে যায়। জানতে চাইলে ওটিতে থাকা দায়িত্বরতরা জানান, অজ্ঞানের ওষুধের কারণে ঘুমিয়ে আছে প্রসূতি। তাকে নেওয়া হয় ওটির পাশের একটি কেবিনে। দীর্ঘক্ষণ শাকিবা নড়াচড়া না করায় সন্দেহ বেড়ে যায়। পরে কেবিনে গিয়ে সাদেকের বাবা অহিদ মিয়া দেখেন শাকিবা নিস্তব্ধ অবস্থায় বিছানায় রয়েছে। তখন চিকিৎসককে ডাকা হলেও একজন নার্স এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসককে এনে দেখান। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চিকিৎসক বুঝতে না দিয়ে সটকে পড়েন। প্রসূতির স্বজনরা কান্নাকাটি শুরু করলে চুপচাপ কেটে পড়েন হাসপাতালের লোকজন। বিকাল ৫টার দিকে উত্তেজিত স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ভাঙচুর চালায় হাসপাতালে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে প্রসূতির লাশ উদ্ধার করে।
নিহত প্রসূতির বাবা বাচ্চু মিয়া বলেন, এরা আমার সুস্থ মেয়েটাকে মেরে ফেলেছে। তিনি চিকিৎসকসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি জানান।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুল কাদের জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।