কক্সবাজারের নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তথ্য যাচাইয়ে নির্বাচন কমিশনকে ডেটাবেজ ব্যবহারে সম্মতি দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসির এনআইডি উইং কর্মকর্তাদের বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর। এ বৈঠকে ইউএনএইচসিআরের জেনেভা ও কক্সবাজারের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে এনআইডি উইং ডিজি বলেন, রোহিঙ্গাদের যে ডেটা ইউএনএইচসিআরের কাছে আছে, আমরা ওই ডেটা পাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করছে। আজকে জানতে পারলাম, ২০১৮ সাল থেকে এ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে (এমওইউ)। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের ডেটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে সম্মত হয়েছে। এ ডেটা কীভাবে ব্যবহার করতে পারি আর উনারা কীভাবে দিতে পারে- এ বিষয় নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।
ডেটা ইসিতে থাকবে : এনআইডি উইং মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর জানান, ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার এ ডেটা ইলেকশন কমিশনে থাকবে, নাকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে থাকবে, নাকি অন্য কোথাও - এটা নিয়ে সরকারের একটা সিদ্ধান্তের ব্যাপার ছিল। ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত হয়েছে, এটা নির্বাচন কমিশনে থাকবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সম্মত হয়েছে। এটা কীভাবে, কোথায়, কখন ব্যবহার করতে হবে তা নিয়ে আরও অনেকবার বসতে হবে বলে জানান তিনি।
তিন পক্ষের কারিগরি টিম : এনআইডি ডিজি বলেন, ইউএনএইচসিআর পরামর্শ অনুযায়ী আজ তিন পক্ষ (ইসি, পররাষ্ট্র, ইউএনএইচসিআর) মিলে একটা টেকনিক্যাল টিম করা হয়েছে। এ টিমে এনআইডি উইংয়ের সিস্টেম ম্যানেজার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন সমন্বয় করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একজন সহকারী সচিব এবং ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি থাকবেন সেই টিমে। আগামী সপ্তাহে এ কারিগরি টিম বৈঠক করবে। এরপর একটা টাইম পাব। যখন থেকে এই ডেটা পাব তখন আমাদের কাজে ব্যবহার করতে পারব। আমাদের আর্জেন্সিটা তাদের বলেছি।
আঙুলের ছাপে যাচাইয়ে সুবিধা : বর্তমানে ইসিতে ১২ কোটি ৩৭ লাখেরও বেশি ভোটারের তথ্য রয়েছে জাতীয় তথ্যভান্ডারে। হালনাগাদ কাজও চলমান। অর্ধকোটি নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা এনআইডি ও পাসপোর্ট পেতে মরিয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা ডেটাবেজ পেতে চায় ইসি। এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। ভোটার রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। রোহিঙ্গা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, তারা এনআইডি ও পাসপোর্ট পাওয়ার চেষ্টা করছে। যত দ্রুত এই ডেটা পাব তত সুবিধা হবে। তিনি জানান, ইসির সুবিধা বহুমাত্রিক। রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে আর এত কষ্ট করতে হবে না। কেননা, আমরা ওই ডেটা পাব, হাতের আঙুলের ছাপ দিলেই জেনে যাব ম্যাচ করছে কি, করছে না। ম্যাচিং হলেই বুঝে যাব এটা রোহিঙ্গা। ম্যাচ না করলে সহজেই বুঝতে পারা যাবে এ ভোটার রোহিঙ্গা না। ডিজি জানান, সুতরাং এটা ইসি প্রথমেই কাজে লাগবে। এটা আমাদের খুবই উপকার হবে। তাদের সঙ্গে বৈঠকে পাসপোর্টের বিষয়টাও আলোচনায় এসেছে। এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, পাসপোর্ট আমাদের এনআইডির ডেটা ব্যবহার করে। যদি এনআইডিকে আমরা ক্লিন করতে পারি তাহলে এবং রোহিঙ্গা নেই এটা যদি নিশ্চিত করতে পারি এটা উনাদের জন্য (পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ) সহজ হবে।