ইসলাম মায়ের মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছে। রসুল (সা.) বলেছেন, 'মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেশত।' (ইবনে মাজা, নাসায়ী)। এ হাদিসের মাধ্যমে স্পষ্টত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে সন্তান জান্নাতে ঠাঁই পাবে কিনা তা মায়ের সন্তুষ্টির ওপর নির্ভরশীল। প্রতিটি মমিনকে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে সচেষ্ট থাকতে হবে তেমনি জননীর প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ ঘটাতে হবে। রসুল (সা.) জেহাদে যাওয়ার চেয়েও মায়ের সেবা করাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
বোখারি ও মুসলিম শরিফের হাদিসে বর্ণিত, এক লোক রসুল (স.)-এর দরবারে এসে বলল : হে আল্লাহর রসুল! কোন ব্যক্তি আমার সদাচরণ ও আনুগত্য পাওয়ার সবচেয়ে বেশি অধিকারী? তিনি এরশাদ করলেন, তোমার 'মা'। সে আরজ করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার 'মা'। আবার সে আরজ করল, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার 'মা'। পুনরায় সে নিবেদন করল, তারপর কে? তিনি জবাব দিলেন, তোমার পিতা। সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান এবং বেশি আদর-সোহাগ করে থাকেন।
একবার হজরত ইবনে ওমর (রা.) দেখতে পেলেন, এক লোক তার মা-কে পিঠে নিয়ে আল্লাহর ঘর তওয়াফ করছে। অনন্তর সে লোক জিজ্ঞেস করল, ইবনে ওমর, আপনি কি মনে করেন, আমি মাকে নিয়ে এভাবে তওয়াফ করায় তার কিছু ঋণ পরিশোধ করতে পারলাম? ইবনে ওমর (রা.) বললেন, তোমাকে গর্ভে ধারণ করাকালীন সময়ের নানাবিধ যাতনার একটির ঋণও শোধ করতে পারনি। তবে তুমি ভালো কাজ করছে, তোমার এ অল্প কাজেই আল্লাহ তোমাকে বহু পুণ্য দেবেন।
হজরত আবু হোরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রসুল (স.) বলেছেন, 'চার শ্রেণির লোককে আল্লাহ কখনই বেহেশতে প্রবেশ করতে দেবেন না, আর জান্নাতের নেয়ামতরাজির স্বাদ নেবারও সুযোগ দেবেন না। (১) মাদকাসক্ত (২) সুদখোর (৩) এতিমের মাল অন্যায়ভাবে আত্মসাৎকারী (৪) পিতা-মাতার অবাধ্যচারী। তবে তারা তওবা করলে ভিন্ন কথা।- হাকেম।
রসুল (স.) বলেন, তিন ধরনের দোয়া অবশ্যই কবুল হয়, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। (ক) মজলুম বা অত্যাচারিতের দোয়া, (খ) মুসাফির বা সফরকারীর দোয়া, (গ) সন্তানের জন্য মাতা-পিতার দোয়া।- তিরমিজি।
লেখক : ইসলামী গবেষক।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ