অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করা ইহুদিরা তাদের একটি ধর্মীয় উৎসব উদ্যাপন করছেন। এ কারণে হেবরনের ওল্ড সিটিতে ফিলিস্তিনিদের জন্য কারফিউ জারি করেছে ইসরায়েল। এমনকি ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সেখানকার ঐতিহ্যবাহী ইব্রাহিমি মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় সমাজকর্মীরা গত শনিবার এ তথ্য জানান।
ওল্ড সিটি অব হেবরনের বাসিন্দা আরেফ জাবের হেবরন ডিফেন্স কমিটির একজন সদস্য। তিনি তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলুকে বলেন, গত শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েলি সেনারা হেবরনের ওল্ড সিটির বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করে রেখেছেন। আরেফ জাবের আরও বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী ওল্ড সিটিতে যাওয়ার সব সামরিক তল্লাশিচৌকি বন্ধ করে দিয়েছে। সেখান থেকে কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দিচ্ছে না। ফলে সেখানকার বাসিন্দা অনেক ফিলিস্তিনি নিজ বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে হেবরনের অন্যান্য অংশে থাকা স্বজনদের বাড়িতে থাকছেন তারা।
জাবের আরও বলেন, অবৈধভাবে বসতি স্থাপনকারী কয়েক শ ইহুদি শুক্রবার রাতে শোভাযাত্রা করে ওল্ড সিটিতে প্রবেশ করেন। গত শনিবার রাতে আবার তারা একইভাবে শোভাযাত্রা নিয়ে ওল্ড সিটিতে যান। ইসরায়েলি বাহিনী এ শোভাযাত্রাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়েছে। হেবরনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় শোভাযাত্রা থেকে নানা উসকানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয়। জাবেরের আশঙ্কা, ইসরায়েল কারফিউ জারি করে ইব্রাহিমি মসজিদের সম্পূর্ণটা দখল করে সেটিকে সিনাগগে রূপান্তর করতে চাইছে। এ চেষ্টার অংশ হিসেবে তারা কারফিউ জারি করে সেখানে মুসলিমদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। শুক্র ও শনিবার ইহুদিরা ‘সারা’স ডে’ উদ্যাপন করেছেন। প্রতি বছর হেবরনে এ উৎসব উদ্যাপন করা হয়। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাচীন হেবরনে একসময় ইহুদিদের আবাস থাকার বিষয়টি তারা স্মরণ করেন।
ইব্রাহিমি মসজিদ হেবরনের ওল্ড সিটিতে। হেবরন নগরীর এ অংশ পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে প্রায় ৪০০ ইহুদি পরিবার অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করেছে।
তথ্যসূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর
তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য প্রায় ১ হাজার ৫০০ ইসরায়েলি সেনা মোতায়েন আছেন।
১৯৯৪ সালে ইসরায়েল মসজিদ কমপ্লেক্সটি ভাগ করে। এটির ৬৩ শতাংশ ইহুদিদের জন্য ও ৩৭ শতাংশ মুসলমানদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে সময় একজন ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ২০ ফিলিস্তিনি মুসল্লিকে হত্যা করেছিলেন।
ইসরায়েল বছরে ১০ দিন মুসলিমদের জন্য ইব্রাহিমি মসজিদ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখে। এ সময়ে ইহুদিরা ধর্মীয় উৎসব উদ্যাপন করেন।