মার্কিন সরকারের শাটডাউন রেকর্ড ৩৬ দিনে পৌঁছানোর পর বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান ৪০টি বিমানবন্দরের ফ্লাইট ১০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া এই হঠাৎ নির্দেশনার ফলে এয়ারলাইনসগুলোকে মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে তড়িঘড়ি নতুন সময়সূচি বানাতে হচ্ছে। আসছে দিনগুলোতে ফ্লাইট ঠিকঠাক থাকবে কিনা তা জানতে এয়ারলাইনসগুলোর কাস্টমার সার্ভিস হটলাইনে যাত্রীদের ফোনের চাপও বেড়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ডাফি বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা সরকার ফের সচলে রাজি হলে এই নির্দেশ বাতিল হয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন যে শাটডাউন চলছে, তা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় শাটডাউন। এর কারণে ১৩ হাজার এয়ার ট্রাফিক কনট্র্রোলার ও ৫০ হাজার পরিবহন নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের এজেন্টকে বেতন ছাড়াই কাজ করে যেতে হচ্ছে। -রয়টার্স
শাটডাউনের অবসানে ট্রাম্প প্রশাসন ডেমোক্র্যাটদের ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছে এবং বিমান চলাচলে বড় বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে নিয়মিত ভয়ও দেখাচ্ছে যেন তারা রিপাবলিকানদের শর্ত মেনে চুক্তিতে আসে।
এদিকে ডেমোক্র্যাটরা শাটডাউনের জন্য রিপাবলিকানদের দায়ী করছে। তারা চাইছে, রিপাবলিকানরা তাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবায় ভর্তুকিসহ বেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতায় আসুক। শাটডাউন শুরুর পর বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কর্মী সংকটের কারণে এরই মধ্যে হাজার হাজার ফ্লাইটে বিঘ্ন ঘটেছে। অন্তত ৩২ লাখ যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ‘নিজেদের কাজের মূল্যায়ন করা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে কঠিন সব সিদ্ধান্ত নেওয়া যেন আকাশপথ নিরাপদ রাখা যায়,’ নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক গোপন মূল্যায়ন প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলেন ডাফি। শাটডাউনের প্রভাব নিয়ে হওয়া ওই প্রতিবেদনে বিমান ট্রাফিক কনট্র্রোলারদের কর্মদক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। মার্কিন ফেডারেল বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এফএএ প্রধান প্রধান এয়ারলাইনসগুলোকে বিভিন্ন বিমানবন্দরে তাদের ফ্লাইট প্রথমে ৪ শতাংশ, শনিবার তা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ, রবিবার ৬ শতাংশ এবং পরের সপ্তাহ থেকে ১০%- এভাবে ধাপে ধাপে কমাতে বলেছে বলে খাত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে। এফএএ আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে এই কাটছাঁটের বাইরে রাখার পরিকল্পনা করছে বলেও ধারণা দিয়েছে তারা। কোন ৪০টি বিমাবন্দরে ১০ শতাংশ ফ্লাইট কমবে সরকার তার তালিকা প্রকাশ না করলেও নিউইয়র্ক সিটি, ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো, আটলান্টা, লস এঞ্জেলেস ও ডালাসের মতো ব্যস্ত ৩০টি বিমানবন্দর ফ্লাইট কমানোর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ১ হাজার ৮০০টির মতো ফ্লাইট কমবে বলে জানিয়েছে বিমান চলাচল বিষয়ক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সিরিয়াম। এফএএ এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত নির্দেশনা প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত কোনো কিছুই স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না, মত সরকারি কর্মকর্তাদের। বিমান ট্রাফিক কনট্র্রোলারদের ওপর থেকে চাপ কমানোর লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।