রাশিয়ার যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশ মোকাবিলায় ন্যাটোর সক্ষমতা আরও জোরদার করা হচ্ছে। গতকাল ব্রাসেলসে জোটটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ন্যাটোর ৩১টি সদস্য দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে এ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। পোল্যান্ড ও এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় রাশিয়ার বিমান অনুপ্রবেশের পর ব্রাসেলসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা সীমান্ত পেরিয়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। এরপর বিভিন্ন দেশে রহস্যজনক ড্রোনের উপস্থিতি বিমানবন্দরগুলোতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। এ ছাড়াও এই ড্রোন সামরিক স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি উড়ে, যা আবারও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, রাশিয়া সীমা পরীক্ষা করছে ও ন্যাটোর প্রতিক্রিয়া যাচাই করছে। একজন পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেন, ‘বিভিন্ন উপায়ে আমরা রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি ও তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছি।’ ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট বলেছেন, ‘আমরা যা প্রশিক্ষণ দিয়েছি, তা করছি এবং এটি কাজ করছে। তবে আমাদের আরও কিছু করতে হবে।’ এ ঘটনার পর ন্যাটো একটি নতুন মিশন চালু করেছে এবং তাদের বাহিনী বাড়িয়েছে। তবে রাশিয়ার কাছাকাছি থাকা কিছু দেশ আরও কঠোর পদক্ষেপ দাবি করছে। কূটনীতিকরা বলছেন, জোটটি রাশিয়ান অনুপ্রবেশ মোকাবিলার জন্য তার নিয়ম-কানুনগুলোকে আরও পর্যালোচনা করতে এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিভিন্ন পদ্ধতির সমাধান করতে চাইছে। এ ছাড়া, ইউক্রেন যেসব কম খরচের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তা নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং অ্যান্টি-ড্রোন সক্ষমতা উন্নত করার কাজও ত্বরান্বিত করছে জোটটি।
এদিকে জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের ন্যাটো নির্ধারিত লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থতার শাস্তি হিসেবে স্পেনের ওপর শুল্ক আরোপের কথা বিবেচনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি এটি ন্যাটোর জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক। তাদের কাজের জন্য আমি বাস্তবিকই শুল্কের মাধ্যমে তাদের বাণিজ্য শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবছি এবং আমি তা দিতে পারি।’ ট্রাম্প গত সপ্তাহে উচ্চতর প্রতিরক্ষা ব্যয়ের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে ব্যর্থতার কারণে ন্যাটো থেকে স্পেনকে বহিষ্কার করার পরামর্শ দেন। জুনে ট্রাম্পের চাপে ৩২ সদস্যরাষ্ট্রের সামরিক জোটটি আগামী দশকে প্রতিরক্ষা ব্যয় বার্ষিক অর্থনৈতিক উৎপাদনের ৫ শতাংশে উন্নীত করতে সম্মত হয়।-এএফপি
কিন্তু গত বছর তুলনামূলকভাবে ন্যাটোর সর্বনিম্ন প্রতিরক্ষা ব্যয় করা স্পেন জোর দিয়ে বলেছে, তাদের খবরের শিরোনাম হওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশটির সমাজতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ যুক্তি দেখান সাইবার নিরাপত্তা, পরিবেশসহ নির্দিষ্ট ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেয়ে তাঁর বিচারে দেশটির সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা উচিত। ট্রাম্পের বহিষ্কারের হুমকির পর মাদ্রিদের সরকারি সূত্র শুক্রবার বলেছেন, ‘স্পেন ন্যাটোর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি পূর্ণ সদস্য দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতোই দেশটি এর সক্ষমতা অনুযায়ী নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে থাকে।’ -এএফপি