রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর থানার শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনাকে কাঠামোগত ও গাফিলতিজনিত হত্যাকাণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। গতকাল এক সংবাদ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় সংস্থাটি। একই সঙ্গে আগুনের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানানোর পাশাপাশি আহতদের সুচিকিৎসা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে আইপিডি।
সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়, অনুমোদনহীনভাবে যত্রতত্র বিপজ্জনক শিল্পকারখানা স্থাপন, অগ্নিনিরাপত্তা সনদ না নেওয়া, ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা, ভবন ও কারখানার যথাযথ ব্যবহার অনুমোদন না নিয়েই বিপজ্জনক ব্যবহার এবং নগর পরিকল্পনা যথাযথভাবে অনুসরণ না করার কারণেই দারিদ্র্যপীড়িত এসব শ্রমিককে আগুনে পুড়ে অসহায়ভাবে মারা যেতে হলো। শিল্পমালিকরা শহরের পরিকল্পনা এবং ইমারত ও শিল্প-সংশ্লিষ্ট সব আইনকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। ভবনের যথাযথ কর্মপরিবেশ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে মানুষের দারিদ্র্যকে পুঁজি করে শিল্পকারখানার মালিকরা শ্রমিকদের বাধ্য করে এ ধরনের কারখানায় কাজ করতে। ফলে মানুষ হত্যার দায় নিয়ে শিল্পমালিকদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করছে আইপিডি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রম অধিদপ্তর, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এদের প্রত্যেকেই তাদের ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করলে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এভাবে মানুষ মারা যেত না। শ্রমিক ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে রাষ্ট্রের সর্বশক্তি দিয়ে এ প্রবণতা রোধ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জোর দাবি জানায় আইপিডি।