ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যাশলি জে. টেলিসকে (৬৪) গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। গোপন সরকারি তথ্য অবৈধভাবে সংরক্ষণের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব ভার্জিনিয়ার মার্কিন অ্যাটর্নি অফিস জানায়, টেলিস যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথি অনুমতি ছাড়াই নিজের কাছে রেখেছিলেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে ১৮ ইউএসসি ধারা ৭৯৩(ই) (18 USC §793(e)) অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। এই আইনে জাতীয় প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত নথি অনুমতি ছাড়া রাখা বা ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সরকারি তদন্তে জানা গেছে, টেলিস কিছু গোপন নথি নির্ধারিত নিরাপদ স্থান থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন এবং কয়েক দফা চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন।
মার্কিন অ্যাটর্নি লিন্ডসে হ্যালিগান এক বিবৃতিতে বলেন, তার (টেলিসের) কর্মকাণ্ড আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও দেশের প্রতিরক্ষার জন্য গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে।
যদি টেলিস দোষী প্রমাণিত হন, তবে তার ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার জরিমানা এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, এটি কেবল অভিযোগ, এবং আদালতে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত টেলিস নির্দোষ হিসেবে গণ্য হবেন।
কে এই অ্যাশলি জে. টেলিস
অ্যাশলি টেলিস একজন খ্যাতিমান একাডেমিক ও নীতি–বিশ্লেষক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী থিংকট্যাঙ্ক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস–এর সিনিয়র ফেলো এবং টাটা চেয়ারে স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অতীতে তিনি মার্কিন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন। পরবর্তীতে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন এবং মার্কিন–ভারত অসামরিক পারমাণবিক চুক্তি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
টেলিস দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্ক বিষয়ে ওয়াশিংটনের অন্যতম প্রভাবশালী বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বিচারাধীন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল