গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তির দাবিতে গতকাল ইসরায়েলজুড়ে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। এদিকে সেনাবাহিনী নতুন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তেল আবিব থেকে এএফপি জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পর এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ২২ মাস ধরে চলমান যুদ্ধের পর ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর যুদ্ধটি শুরু হয়। ওই হামলার সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজায় এখনো ৪৯ জন বন্দি রয়ে গেছেন, যার মধ্যে ২৭ জন মারা গেছেন।
তেল আবিবের তথাকথিত হোস্টেজ স্কোয়ারে অবশিষ্ট বন্দিদের প্রতিকৃতি দিয়ে ঢাকা একটি বিশাল ইসরায়েলি পতাকা উত্তোলন করা হয়। ওই স্থান ছিল যুদ্ধজুড়ে দীর্ঘকাল বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু। স্থানীয় মিডিয়া ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা তেল আবিব এবং জেরুজালেমকে সংযোগকারী মহাসড়কসহ নগরীর বেশ কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে। বিক্ষোভকারীরা সেখানে টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেয় ও যানজটের সৃষ্টি করে। বিক্ষোভ, সংগঠক ও জিম্মিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী প্রধান দলও রবিবার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। গাজা সিটি ও এর কাছাকাছি শরণার্থী শিবিরে যুদ্ধ সম্প্রসারণের ইসরায়েলি পরিকল্পনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিরোধিতারও জন্ম দিয়েছে।
জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই অঞ্চলে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দিচ্ছে। তবে ইসরায়েল তার অনুমোদিত মানবিক সাহায্যের পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা শনিবার বিতরণ স্থানের কাছে খাদ্যসহায়তা সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করার সময় কমপক্ষে ১৩ জন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে। সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপির হিসাব অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার ফলে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলের হামলায় ৬১ হাজার ৮৯৭ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।