মার্কিন নাগরিকদের ডিজিটাল মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপকারী বিদেশি নাগরিকদের জন্য নতুন ভিসানীতির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট নিয়ে মার্কিনিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া অন্য দেশের সরকার ও রাষ্টীয় কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না। এমনকি এখন থেকে মার্কিন নাগরিকদের কোনো বক্তব্য সেন্সর করলেও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারেন অন্য দেশের নাগরিকরা।
খবরে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর সেন্সরশিপের অভিযোগও এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন নাগরিকদের ডিজিটাল মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপকারীদের বিরুদ্ধে নতুন ভিসানীতির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ঘোষণা অনুযায়ী, যেসব বিদেশি রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা মার্কিন নাগরিকদের সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেন বা কনটেন্ট মুছতে বলেন তাদের আর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়া হবে না। গত ২৮ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মতপ্রকাশ করলে, তা যদি কোনো বিদেশি সরকারের পছন্দ না হয়, তাও তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর তারা সেন্সরশিপ চাপিয়ে দিতেও পারবেন না। তবে কোন কোন দেশের বিরুদ্ধে এ নতুন ভিসানীতি কার্যকর হবে তা বিবৃতিতে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি রুবিও।
প্রসঙ্গত, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসা আবেদনকারীদের জন্য নতুন সাক্ষাৎকার স্থগিত করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। একই সঙ্গে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানায় বিভিন্ন গণমাধ্যম।
রুবিও বলেছেন, মার্কিন মুল্লুকে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলার জন্য বিদেশি কর্মকর্তারা অনেক সময় আইনি পদক্ষেপ নেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই মার্কিন নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বা কোনো সেন্সরশিপ করলে জড়িত বিদেশি কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনে ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হবে। রয়টার্স
অবশ্য সেন্সর বলতে ঠিক কী বোঝাচ্ছেন, তা স্পষ্ট করেননি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে সাম্প্রতিক একটি আইন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা বলেছিল, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট নামে একটি আইন তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মতামত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। গত মার্চে মার্কিন যোগাযোগ পরিষদের প্রধান বলেছিলেন, ওই আইনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।
নতুন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিদেশি কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টাও ঠেকানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন রুবিও। তিনি বলেছেন, কিছু বিদেশি কর্মকর্তা মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। তারা বৈশ্বিক নীতি মেনে মার্কিন প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলোকে পরিচালনার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ একদমই গ্রহণযোগ্য নয়।