প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থনৈতিক অস্থিরতার ফলে দেনার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকরা ক্রমেই চাপে পড়ছেন। স্বল্প ও মধ্যআয়ের মানুষের বসতবাড়ি নিলামে উঠার হার গত বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে।
সহায়–সম্পদবিষয়ক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণকারী সংস্থা অ্যাটম’র সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মাসে ৩৬ হাজার ৭৬৬টি বাড়ি নিলামে উঠেছে—যা আগের মাস সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি। টানা আট মাস ধরেই বাড়ছে নিলামে উঠার এই হার।
অ্যাটম জানায়, গত এক দশক ধরে নিলামে বাড়ি উঠার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধির বিপরীতে আমেরিকানদের আয় বাড়েনি; বরং অনেক ক্ষেত্রেই কমেছে। ফলে দেনার বোঝা বেড়ে কিস্তি পরিশোধ কঠিন হয়ে পড়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের জন্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ি নিলামে উঠেছে। এরপর রয়েছে সাউথ ক্যারোলাইনা, ডেলাওয়্যার এবং নেভাদা।
ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার ওয়ারটন স্কুলের আবাসন, ব্যবসা-অর্থনীতি ও পাবলিক পলিসি বিষয়ক অধ্যাপক ফার্নান্দো ফেরেইরা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৫৯টি বাড়ি নিলামে উঠেছে-যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৮ শতাংশ বেশি। এমনকি ২০১০ সালের প্রথম ছয় মাসের তুলনায়ও এই সংখ্যা বেশি; সেই সময়ে নিলামে উঠেছিল প্রায় ১৭ লাখ বাড়ি।
অধ্যাপক ফেরেইরা আরও বলেন, শ্রমবাজারের দুর্বলতা এবং বেকারত্ব বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। তাঁর মতে, বাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো ছাড়া তাত্ক্ষণিক কোনো কার্যকর সমাধান নেই।
বোস্টন ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির সহযোগী অধ্যাপক অ্যাডাম গুরেন মন্তব্য করেন, প্রতিটি নিলামের পেছনে একেকটি পরিবার মানবিক সংকটে পড়ে। এর নেতিবাচক প্রভাব সামাজিক অপরাধ, বিবাহবিচ্ছেদসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও এখনো পুরোপুরি কাটেনি, যা এই সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল