খানসামায় প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালটি কবে চালু হবে কেউ বলতে পারছেন না। অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে না। হাসপাতালের মূল গেটে ঝুলছে তালা।
হাসপাতালটি জনবল নিয়োগ ও অর্থনৈতিক বাজেট না থাকায় হাসপাতালটি ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর উদ্বোধনের পর থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে কোটি টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তাহীন অবস্থায় থাকায় প্রায়ই চুরি হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ এবং ৪ বছর ধরে পরিত্যাক্ত থাকায় ভবনের বেশিরভাগ জায়গা ধুলা, মাকড়সার জাল ও আগাছায় ভরে গেছে।
স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নির্মিত হাসপাতালটিকে প্রথমে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে এনে সীমিত বহির্বিভাগ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট থাকায় সেটিও বন্ধ হয়ে যায়।
সোমবার সকালে দেখা যায়, ২০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালের মূল গেটে তালা। আত্রাই নদীর তীরে জিয়া সেতু মোড়ে নির্মিত দুই তলার এই ভবনটি এখন কার্যত পরিত্যক্ত। ভবনের পাশে রয়েছে তিনটি আবাসিক কোয়ার্টার, রান্নাঘর, গ্যারেজ ও বিদ্যুৎ স্টেশনসহ প্রয়োজনীয় স্থাপনা। তবে চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ভবনের বেশিরভাগ জায়গা ধুলা, মাকড়সার জাল ও আগাছায় ভরে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি হাসপাতালের ভেতর থেকে বিদ্যুতের তার ও ভারী যন্ত্রপাতিসহ ৪-৫ লক্ষ টাকার মূল্যবান সরঞ্জাম চুরি হয়েছে। এঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খানসামা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম এ এস এম রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, খানসামা ২০ শয্যা হাসাপাতালের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা। দ্রুত বিল পরিশোধ করতে স্বাস্থ্য বিভাগকে লিখিত চিঠির মাধ্যমে অবগত করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, এই হাসপাতালটি চালু হলে খানসামার গোবিন্দপুর, টংগুয়া, বেলপুকুর, সহজপুর, হোসেনপুর, জাহাঙ্গীরপুর, বাশুলী, শুশুলী, ফরিদাবাদ, জয়গঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী তুলশিপুরসহ আশপাশের একাধিক ইউনিয়নের মানুষ উপকৃত হতো। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বীরগঞ্জ, দেবীগঞ্জ ও নীলফামারী সদর উপজেলার বাসিন্দারাও সেবা পেতেন।
স্থানীয় সাজিদ ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এত টাকা খরচ করে হাসপাতাল করেছে, কিন্তু চিকিৎসা সেবা তো চালু হলো না। এখন পুরো ভবনটা মরুভূমির মতো পড়ে আছে।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালটির অবকাঠামো অত্যন্ত ভালো। কিন্তু জনবল ও আর্থিক বরাদ্দ না থাকায় এখনো সেবা চালু করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। সম্প্রতি ওই হাসপাতাল বিষয়ে তথ্য চেয়েছে, তা পাঠানো হয়েছে। নিয়মিত সেবা চালুর বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল