উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উনের প্রতীকী সবুজ ট্রেন আবারও আলোচনায়। চীনের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিতে এবারও তিনি বেছে নিলেন তার আভিজাত্যে ভরা সুরক্ষিত ট্রেনটিকে।
সোনালি ক্রেস্ট খচিত সবুজ ট্রেনটিকে বলা হয় এক চলমান দূর্গ। এই ট্রেনে রয়েছে শোবার ঘর, প্রশস্ত অফিস, রেস্তোরাঁ, এমনকি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশেষ বগি। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, কাঠের নকশা করা অভিজাত অফিসকক্ষে বসে আছেন কিম, সামনে একাধিক টেলিফোন ও সোনালি রঙের ল্যাপটপ। জানা যায়, ট্রেনে দুটি সাঁজোয়া মার্সিডিজ গাড়ির জন্য আলাদা বগিও রয়েছে।
এই ‘মুভিং ফোর্ট্রেস’ গড়ে তোলা হয়েছে কেবল নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে। গড় গতি ঘণ্টায় মাত্র ৬০ কিলোমিটার হলেও ট্রেনটির জানালা ও দেয়াল সম্পূর্ণ বুলেটপ্রুফ। বিদেশ সফরে গেলে রাশিয়ার সীমান্তে বদলে দেওয়া হয় চাকা, আর চীনে প্রবেশ করলে সেটিকে টেনে নিয়ে যায় সেখানকার ইঞ্জিন।
কিম পরিবারের ট্রেন-ভ্রমণের ঐতিহ্য শুরু হয় উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুংয়ের সময় থেকে। তার পুত্র কিম জং ইল বিমান ভ্রমণে ভীত ছিলেন, তাই মস্কো পর্যন্ত ২০ হাজার কিলোমিটার পথও তিনি ট্রেনে গিয়েছিলেন। সেই সফরে জীবন্ত লবস্টার থেকে ফরাসি ওয়াইন— বিলাসিতার অভাব ছিল না। বর্তমানে কিম জং ইলের ট্রেন তাঁর সমাধি-স্মৃতিসৌধে প্রদর্শিত হচ্ছে।
বর্তমান নেতা কিম জং উন মাঝেমধ্যে বিমানে চড়লেও পারিবারিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে আজও সবুজ ট্রেনকেই প্রাধান্য দেন। ধীরগতি ও দৃশ্যমান এই সফরগুলো যেমন তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, তেমনি রাষ্ট্রীয় প্রচারণারও অংশ হয়ে দাঁড়ায়। বার্তা দেয়, উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব নিজের নিয়মেই বিশ্বের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল