রাশিয়া টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের কল পরিষেবায় আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির ডিজিটাল উন্নয়ন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতারণা ও সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত মামলায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনুরোধে প্রয়োজনীয় তথ্য না দেওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রসকোমনাডজর জানায়, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে এই বিদেশি মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম দুটির কল ফিচারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত চ্যাটসহ অন্যান্য কার্যকারিতা চালু রয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১১ আগস্ট থেকে টেলিগ্রামে ভয়েস কল কার্যত অকার্যকর হয়ে গেছে। হোয়াটসঅ্যাপেও কলের সময় শব্দ বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং ধাতব ধরনের শব্দ শুনতে পাওয়ার ঘটনা ঘটছে, যা কল করা প্রায় অসম্ভব করে তুলছে।
রাশিয়ার সঙ্গে বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েনে রয়েছে। বিশেষ করে ইউক্রেনে ২০২২ সালের আগ্রাসনের পর থেকে এসব প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ ও ডেটা সংরক্ষণ নিয়ে বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে।
দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি কমিটির উপপ্রধান অ্যান্টন গোরেলকিন জানান, টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ যদি রাশিয়ায় আইনি সত্তা প্রতিষ্ঠা করে এবং রুশ আইন মেনে চলতে রাজি হয়, তাহলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে। তবে হোয়াটসঅ্যাপকে রুশ বাজার ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে সমালোচকরা বলছেন, রাশিয়া এভাবে ধীরে ধীরে দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, রাশিয়া এখন এমন প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন করছে যার মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইট ও সুরক্ষা সরঞ্জামগুলোকে ব্লক বা ধীর করা সহজ হয়ে উঠছে।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যে একটি রাষ্ট্র-সমর্থিত মেসেজিং অ্যাপ তৈরির অনুমোদন দিয়েছেন। লক্ষ্য, বিদেশি সেবার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে একটি 'ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব' প্রতিষ্ঠা।
সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/মুসা