ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল কর্তৃক গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির জনপ্রিয় লেখক ও শান্তিকামী কর্মী ডেভিড গ্রসম্যান।
তিনি বলেন, “আমি এই শব্দটি বলছি এক ভাঙা হৃদয় নিয়ে।”
ইতালির দৈনিক লা রিপাবলিকা’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শুক্রবার গ্রসম্যান বলেন, অনেক বছর ধরে আমি গণহত্যা শব্দটি ব্যবহার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি। কিন্তু এখন, যেসব ছবি দেখেছি এবং যেসব মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি- তারপর আমি আর চুপ থাকতে পারি না।
তিনি বলেন, “আমি এই শব্দটি উচ্চারণ করছি সীমাহীন যন্ত্রণা ও এক ভাঙা হৃদয় নিয়ে। এই শব্দটি যেন এক ধ্বংসাত্মক তুষারধস- একবার বলা শুরু করলে এটা কেবল বড় হতে থাকে, আরও ধ্বংস, আরও কষ্ট তৈরি করে।”
এই বক্তব্য এমন এক সময় এল যখন কয়েকদিন আগেই ইসরায়েলেরই প্রখ্যাত মানবাধিকার সংস্থা বেতসেলেম গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানকে গণহত্যা বলে অভিহিত করে। চারদিকে যখন গাজার জনগণের ওপর ক্ষুধা ও অবরোধের ভয়াবহতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে, তখন গ্রসম্যানের এই বিবৃতি তাৎপর্যপূর্ণ।
ডেভিড গ্রসম্যানের সাহিত্যকর্ম শতাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বহু আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে তিনি ইসরায়েলের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার ‘ইসরায়েল প্রাইজ ফর লিটারেচার’ লাভ করেন তিন দশকেরও বেশি সময়ের সাহিত্য অবদানের জন্য।
তিনি বলেন, হলোকাস্টের ইতিহাস এবং মানবজীবনের কষ্টের প্রতি আমাদের তথাকথিত সংবেদনশীলতার কথা বিবেচনা করে- ‘ইসরায়েল’ এবং ‘ক্ষুধামারী’ শব্দ দুটি একসাথে উচ্চারণ করা ধ্বংসাত্মক।
গ্রসম্যান আরও বলেন, আমরা যদি এখনও চোখ না খুলি, যদি এই অবর্ণনীয় কষ্টকে স্বীকার না করি- তাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। গ্রসম্যান বরাবরই ইসরায়েলি সরকারের কট্টর সমালোচক। তবে এবার তার নিজের দেশকে গণহত্যা সংঘটনকারী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি করল। বিশ্লেষকদের মতে, ডেভিড গ্রসম্যানের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নৈতিক চাপ আরও বাড়াবে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, টাইমস অব ইসরায়েল, হারেৎজ, এএফপি
বিডি প্রতিদিন/একেএ