২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে ভিন্ন নামে চুপিসারে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলে আভনার নেতানিয়াহু।
সে সময় যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা চলছিল এবং এ ক্রয় সম্পর্কে ইসরায়েলি কর কর্তৃপক্ষকে জানানো তার জন্য বাধ্যতামূলক ছিল না।
বুধবার ইসরায়েলের অর্থনীতি ও বাণিজ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম কালকালিস্ত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্সফোর্ড শহরে ৫ লাখ ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড (৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার) মূল্যের অ্যাপার্টমেন্টটি আভনার কিনেছিলেন ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে। ওই সময় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ঘোষিত একটি বাজেট প্রস্তাব পাউন্ডের মান ধসিয়ে দেয়।
খবরে বলা হয়, অ্যাপার্টমেন্টটির জন্য আভনার ১৯ লাখ ৮০ হাজার শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) পরিশোধ করেন। বিদেশে সম্পদ কেনাকাটার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের কর কর্তৃপক্ষকে বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হয় এমন ২০ লাখ শেকেল সীমার নিচে এটি।
কালকালিস্ত বলছে, লিজ ট্রাসের বাজেট ঘোষণার ঠিক ১০ দিন আগে বা পরে যদি অ্যাপার্টমেন্টটি কেনা হতো, তাহলে সেটির মূল্য ২০ লাখ শেকেল ছাড়িয়ে যেত এবং তা ইসরায়েলি কর কর্তৃপক্ষকে জানানো বাধ্যতামূলক হতো।
যুক্তরাজ্যের ভূমি রেজিস্ট্রির তথ্য উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি জানায়, অ্যাপার্টমেন্টটি কেনার সময় ক্রেতার নাম হিসেবে ‘আভি আভনার সেগাল’ ব্যবহার করা হয়। এটি আভনার নেতানিয়াহুর একটি বৈধ ছদ্মনাম। এ নামটি তিনি তার বাবার দিকের এক দাদির পদবি থেকে গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য আভনারকে কোনও মর্টগেজ নিতে হয়নি।
ক্রয়–সংক্রান্ত সমালোচনার জবাবে আভনার কালকালিস্তকে বলেন, নাম পরিবর্তনটি আইনি প্রক্রিয়াতেই হয়েছে এবং তা ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত।
তিনি বলেন, আমি প্রথমে আমার পরিচয়পত্রে নাম পরিবর্তন করি, এরপর পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সেও পরিবর্তন করি। সব মিলিয়ে এটি একটি পুরো প্যাকেজ।”
তিনি দাবি করেন, “ইসরায়েল ও যুক্তরাজ্যের কর কর্তৃপক্ষের কাছে যা যা জানানো দরকার, সবই জানানো হয়েছে। আমি যেখানে যেমন নিয়ম, সব কিছু আইনি পথেই করেছি।”
বর্তমানে কৌশলগত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড’-এ (হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউসির অংশ) কাজ করছেন আভনার। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণেই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।
যে সময় ওই অ্যাপার্টমেন্ট কেনা হয়, তখন তার বাবা নেতানিয়াহু বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন এবং বিদেশে পড়ালেখার সময় তার (আভনার) জন্য শিন বেতের (ইসরায়েলি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা) নিরাপত্তা চাওয়া হলেও তা মঞ্জুর হয়নি।
আভনার বলেন, “তখন আমার সঙ্গে কোনও নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। আমি জানতাম, যদি সেই নামটা নিয়ে বিদেশের কোনও দেশে—রেলস্টেশনের মতো স্থানে হেঁটে বেড়াই, তাহলে প্রথমেই কেউ ছুরি মেরে বসবেন।” সূত্র: কালকালিস্ত, টাইমস অব ইসরায়েল, মিডল ইস্ট আই
বিডি প্রতিদিন/একেএ