গাজার আল-শিফা হাসপাতালের কাছে এক ফ্ল্যাটে আশ্রয় নিয়েছিলেন হাদিল সালেহ ও তাঁর পরিবার। পবিত্র রমজান মাসের সেই সময়টাতে তাঁরা ছিলেন আতঙ্কিত, ক্ষুধার্ত ও চরম অনিশ্চয়তায়। হঠাৎ এক রাতে ইসরায়েলি সেনারা ঢুকে পড়ে তাঁদের ফ্ল্যাটে। নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে হাদিলের বাবা (৬০) ও বড় ভাইকে। ওই হামলার পর জীবিতদেরও ঘরছাড়া করে বাহিনী।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ, মধ্যরাতে। আল-শিফা হাসপাতাল এবং আশপাশের এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বড় ধরনের অভিযান চলছিল। প্রচণ্ড গোলাগুলি, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ট্যাংকের গর্জনে কেঁপে উঠেছিল পুরো এলাকা। হাদিল বলেন, “রাত আড়াইটার দিকে আমাদের ঘুম ভেঙে যায় ট্যাংক ও যুদ্ধবিমানের শব্দে।”
হাদিলদের পরিবার একাধিকবার গৃহহীন হয়ে গাজাজুড়ে ঘুরে বেড়িয়েছিল। যুদ্ধের প্রথম বছরে তাঁরা অন্তত ১০ বার স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হন। সর্বশেষ আশ্রয়স্থল ছিল হাইদার আবদেল শাফি মোড়ের পাশের একটি ফ্ল্যাট, যা আল-শিফা হাসপাতালের কাছেই। সেই বাড়িতেই ঘটে যায় নারকীয় হত্যাকাণ্ড।
হাদিল বলেন, “আমরা ইফতার করতে পারতাম না, নামাজ পড়তেও পারতাম না। অন্ধকারে টর্চ পর্যন্ত জ্বালাতে সাহস পেতাম না। চারদিকে ছিল সেনাদের পদচারণা, ট্যাংকের গর্জন।”
টানা আট দিন লুকিয়ে থাকার পর অবশেষে ইসরায়েলি সেনারা হাদিলদের আশ্রয়স্থলে পৌঁছে। গুলি করে হত্যা করে তাঁর বাবা ও ভাইকে। আহত, নিঃস্ব ও আতঙ্কিত হাদিল এখনো সেই বাসায় ফিরে যেতে পারেননি। দাঁড়িয়ে থেকেই বর্ণনা করেন জীবনের সবচেয়ে ভয়ানক রাতটির কথা।
হাদিল বলেন, “আমার পরিবারের ওপর যা ঘটেছে, সেটা কোনো মানুষ চাইবে না। শুধু আমার পরিবার নয়, এমন অসংখ্য পরিবারকে এই বর্বরতা সহ্য করতে হয়েছে।”
সূত্র: মিডইস্ট আই
বিডি প্রতিদিন/আশিক