মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গের সামনে বড়সড় বিপদ। এবার তিনি এক গুরুতর বিষয়ের মুখোমুখি। তার বিরুদ্ধে একচেটিয়া বাজার দখলের মামলায় বিচারকাজ শুরু হয়েছে।
সোমবার ওয়াশিংটনে চলা এই মামলার বিচারে ছবি শেয়ারিং ও মেসেজিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রাম বিক্রিতে বাধ্য হতে পারেন জাকারবার্গ। মার্কিন প্রতিযোগিতা ও ভোক্তা অধিকার বিষয়ে নজরদারি সংস্থা অভিযোগ করেছে, প্রতিযোগিতা দূর করতে ২০১২ সালে ইনস্টাগ্রাম ও ২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয় মেটা। যা কার্যকরভাবে কোম্পানিটিকে একচেটিয়া অধিকার দিয়েছে।
মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপকে প্রতিযোগিতামূলকভাবে অধিগ্রহণ করা এড়াতে তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম (মেটা) বাজারক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) কৌঁসুলিরা যুক্তি দিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক (পরে মেটা নাম গ্রহণ) বাজার প্রতিযোগিতাকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে ওই দুই প্রতিষ্ঠানকে ‘গ্রাস’ করেছে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে শুরু হওয়া ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনেও অব্যাহত থাকা বড় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির বিরুদ্ধে অ্যান্টিট্রাস্ট অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে ফেডারেল ট্রেড কমিশন বা এফটিসি। তারা মামলায় জয়ী হলে জাকারবার্গকে তাদের মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেজ শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামের মালিকানা ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে পারে।
এর আগে এ বিষয়ে মেটা বলেছিল, এ মামলায় তারা জিতবে এবং এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত।
২০১১ সালে ফেসবুকের একটি অভ্যন্তরীণ ই-মেইলে সতর্ক করা হয়েছিল যে ইনস্টাগ্রাম স্মার্টফোনে একটি জনপ্রিয় অ্যাপ হয়ে উঠেছে এবং জাকারবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নেটওয়ার্ক (ফেসবুক) যা অফার দেয়, তা সহজেই অনুলিপি করতে পারে এটি।
ইনস্টাগ্রামকে অধিগ্রহণ করাবিষয়ক ২০১২ সালের আরেকটি ই-মেইলে কোনো উন্নয়ন না করেই জনপ্রিয় এ অ্যাপ চালু রাখার ও ফেসবুকের নিজস্ব সেবার উন্নয়ন করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল, ফেসবুকের হতাশ ব্যবহারকারীদের এ প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়া এড়ানো।
ইনস্টাগ্রামকে অধিগ্রহণ করার আগে এসব ই-মেইলকে প্রাথমিক কথাবার্তা হিসেবে খাটো করে দেখান মার্ক জাকারবার্গ।
এদিকে মেটাকে যাতে অ্যান্টিট্রাস্ট বিচারের মুখোমুখি হতে না হয় এজন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে একটি সমঝোতায় রাজি হওয়ার জন্য তদবির করছেন জাকারবার্গ। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে গত সপ্তাহে এমন খবর প্রকাশ করে আমেরিকান দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অধিগ্রহণের পর থেকে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা আরও ভাল অভিজ্ঞতা পেয়েছেন এমন যুক্তি দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মেটার। ‘ভ্যান্ডারবিল্ট ল স্কুল’-এর অ্যান্টিট্রাস্ট বিভাগের অধ্যাপক রেবেকা অ্যালেনসওয়ার্থ বলেছেন, এফটিসির যুক্তি হচ্ছে, মেটার ইনস্টাগ্রাম কেনার সিদ্ধান্ত ছিল তাদের ফেসবুকের ওপর থেকে প্রতিযোগিতার চাপ ঝেড়ে ফেলা।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল