সরকার সম্প্রতি জাতীয় সঞ্চয়পত্রের চারটি প্রধান স্কিমে মুনাফার হার ৪৭ থেকে ৫৭ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, বিশেষত অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মাঝে, তবুও সামগ্রিকভাবে পদক্ষেপটি একটি সঠিক দিক-নির্দেশনার প্রতিফলন, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বাজেট ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন বিনিয়োগে বিভিন্ন পলিসিতে সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। ১ জুলাই থেকে যে সুদহার চালু হয়েছে, সে অনুযায়ী যাদের বিনিয়োগ কম তাদের সুদহার তুলনামূলক বেশি। আর যাদের বিনিয়োগের পরিমাণ বেশি তারা সুদ পাবেন কিছুটা কম। এক্ষেত্রে কম ও বেশির সীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে সাত লাখ টাকা। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্রে কারও বিনিয়োগ যদি সাড়ে সাত লাখ টাকার কম হয় তাহলে তিনি তুলনামূলকভাবে বেশি সুদহার পাবেন। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার পাবেন তুলনামূলক কিছুটা কম। বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের অধীনে যে সব সঞ্চয়পত্র রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্র। এ সঞ্চয়পত্রে এতদিন সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছরের মেয়াদপূর্তিতে মুনাফার হার ছিল সাড়ে ১২ শতাংশ। এখন তা কমে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ হচ্ছে। আর সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে এ মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সেটি কমিয়ে করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। অন্যদিকে, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশন সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মেয়াদপূর্তিতে মুনাফা ছিল ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ১ জুলাই থেকে তা করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ, এখন থেকে তা হবে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
একইভাবে অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রেও চলতি অর্থবছর থেকে সুদহার কমানো হয়েছে। এই হারের সীমা কেবল নতুন বিনিয়োগ বা পুনর্বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। আগের শর্তে যেসব সঞ্চয়পত্র ইস্যু হয়েছে, সেগুলোর হার অপরিবর্তিত থাকবে। কেন এই পদক্ষেপ : সুদহারে ভারসাম্য বজায় রেখে বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ সরকারি সঞ্চয়পত্রে উচ্চ সুদ প্রদানের ফলে প্রতি বছর সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দিতে হয়।