বৈচিত্র্যময় জাতি-গোষ্ঠীর দেশ বাংলাদেশ। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো সাঁওতাল জনগোষ্ঠী। সাঁওতালরা আদিবাসীদের মধ্যে সংখ্যায় দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। তারা রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগে বসবাস করে থাকেন। সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মানুষ রয়েছে ৭ লাখের বেশি। তবে ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী তাদের সংখ্যা দেখানো হয়েছে মাত্র ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৯ জন। এই সরকারি তথ্য নিয়ে সাঁওতাল জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। এই জাতিগোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, আচার-ঐতিহ্য। তাদের রয়েছে সমৃদ্ধ ভাষা ও ঐতিহ্য। যদিও সময়ের আবর্তে তা বিলুপ্তির পথে হাঁটছে। সাঁওতালদের নিজস্ব মাতৃভাষা সাঁওতালি ভাষা। এ ভাষা চর্চা ও সংরক্ষণে এগিয়ে এসেছে এনএজিআর (ন্যাশনাল এজেন্সি ফর গ্রিন রেভ্যুলেশন)। এটি একটি বেসরকারি অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থা। প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের নিজস্ব মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের মাধ্যমে সাঁওতাল
শিশুদের মধ্যে তাদের ভাষা চর্চাসহ নিজস্ব রীতিনীতি চর্চার সুযোগ করেছে সংস্থাটি। এনএনজিআর সংস্থাটি বৃহত্তর উত্তরবঙ্গের সাঁওতাল অধ্যুষিত রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার ৩০টি স্কুলে সংস্থার একটি মৌলিক কারিকুলামের মাধ্যমে সাঁওতাল শিশুদের নিজস্ব মাতৃভাষায় শিক্ষাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এনএজিআর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল ও সদর উপজেলায় পাঁচটি স্কুলের মাধ্যমে প্রায় ৫০০ শিশুকে সাওতালি শিক্ষা প্রদান করছে। সংস্থাটির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, সাঁওতালি ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে লালন করা। এর মাধ্যমে সাঁওতালি ভাষা যেমন বাঁচবে তেমনি সংস্কৃতির চর্চা বাড়বে নতুন প্রজন্মের কাছে। এনএজিআর যে শুধু শিশুদের মাঝেই সাঁওতালি ভাষাচর্চা ছড়িয়ে দিচ্ছে তা নয়; সাঁওতাল কিশোর-কিশোরীদের ভাষা ক্লাব গঠনের মাধ্যমে তাদের মাঝেও সাঁওতালি ভাষা চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কিশোর-কিশোরীদের মাঝে সাঁওতালি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও আচার চর্চা চলছে। এর ফলে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি আলাদা মমত্বের জন্ম নিচ্ছে। এই সাঁওতালি ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চা কার্যক্রমটি মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি নামক সংস্থার সহযোগিতায় বহুভাষা শিক্ষা কার্যক্রম প্রোগ্রামের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। এনএজিআরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার প্রদীপ হেমব্রম বলেন, ‘মাতৃভাষা শিক্ষা ছাড়াও সংস্থাটি আদিবাসীসহ অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক সচেতনতা বিশেষ করে বাল্যবিয়ে ও মাদকদ্রব্য ব্যবহার রোধ এবং পারিবারিক আয় বৃদ্ধি ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।’ এনএজিআরের নির্বাহী পরিচালক স্টেফেন সরেন বলেন, ‘সংস্থাটির লক্ষ্য হচ্ছে এই বহুভাষা শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব সাঁওতাল গ্রামে সাঁওতালি মাতৃভাষা শিক্ষা পরিচালিত করা। আগামীতে সাঁওতালি ভাষা চর্চার মাধ্যমে বেঁচে থাকবে।’ এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নকিব উদ্দিন তরফদার বলেন, ‘এনএজিআর সাঁওতালদের নিজস্ব ভাষা রক্ষার জন্য যে কাজ করছে তা প্রশংসনীয়। আগামীতে এই সাঁওতালি ভাষা রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’
শিরোনাম
- জলবায়ু অর্থায়নের নামে ভয়াবহ ঋণের ফাঁদ
- চায়ের আড্ডায় টুকুর গণসংযোগ
- মোংলায় লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষের প্রচারণা
- সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযান, গ্রেফতার ১৭০০
- বরিশালের তিন অসহায় নারীর স্বামীকে রিকশা বিতরণ
- নারী কাবাডি বিশ্বকাপের ট্রফি উন্মোচন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
- র্যাবের অভিযান টের পেয়ে সন্ত্রাসীর ছোড়া গুলি লাগলো গৃহবধূর বুকে
- রোহিঙ্গা ভোটার চিহ্নিত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ ইসির
- প্রেষণে জনবল নিয়োগে বাংলাদেশ ও কাতার সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর
- ভবিষ্যতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকবে না : আমিনুল
- গণতন্ত্র উত্তরণের পথ হলো সফল জাতীয় নির্বাচন : মান্না
- ‘হিংসার রাজনীতি করে শেখ হাসিনা বগুড়ার উন্নয়ন করেনি’
- তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান সেলিমের
- একটি দল ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করছে: তৃপ্তি
- নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করতে হবে : মোশাররফ
- কুমিল্লা বোর্ডে ফেল থেকে পাশ ১০৮ জন
- আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন
- সোমবার সারা দেশে যানবাহন চলবে : পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন
- ব্রিতে নবান্ন উৎসব উদযাপিত
- বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা
সাঁওতালদের মাতৃভাষা রক্ষার প্রচেষ্টা
মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর