আইনে অনেক কিছু দেওয়া থাকে তারপরও ব্যাখ্যা লাগলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্পষ্টকরণ ব্যাখ্যা দেয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এসব ব্যাখ্যা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা শুনতে চায় না। কাস্টম হাউসে এ ধরনের ঘটনাগুলো বেশি ঘটে। এ ছাড়া অনেক সময় কর্মকর্তারা অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করে। যে পণ্যের যে মূল্য সে হিসেবেই ধরতে হবে। এনবিআর অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণের অত্যাচার থেকে বের হতে চায়।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের মাল্টিপারপাস হলে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সদস্যদের সঙ্গে ‘মিট দ্য বিজনেস’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি ব্যবসায়ীদের অভিযোগের জবাবে নানা সমস্যার কথা স্বীকার করেন এবং প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে অভিযোগ জানানোর কথা বলেন ব্যবসায়ীদের। এ সময় ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) নির্বাহী পরিচালক টি আই এম নুরুল কবির, পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমানসহ এফআইসিসিআই ৮৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ব্যবসাবাণিজ্য সহজ করার জন্য কাজ করেছি। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যাখ্যা দেই মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ব্যাখ্যা মানতে চায় না। কাস্টম হাউসগুলোয় এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন আপনারা এটা মানবেন কেন? এরকম ঘটনা থাকলেও অভিযোগ দায়ের করুন অনলাইনে বা অফলাইনে। তারপর আমরা তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করব।
কাস্টমসের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি বলেন, আমরাও অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণের জন্য তাদের কে বলেছে?
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আবদুর রহমান বলেন, যে কারও সঙ্গে অন্যায় করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন অনিয়মকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মেরিকো বাংলাদেশের এর প্রতিনিধি মো. শরীফের এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এখন আর কর অব্যাহতি দেই না। কর অব্যাহতি এখন সংসদের হাতে চলে গেছে। যার কারণে আমাদের ওপর অনেক চাপ কমে গেছে।
দারাজের প্রতিনিধি হাসিবুল কুদ্দুস ফেসবুকের এবং অফলাইনে যারা পণ্য বিক্রয় করে তাদের ভ্যাট ১৫ শতাংশ করার দাবি জানান। জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, খুচরা পর্যায় অনেকে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন করছে না। ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মাত্র ৬ লাখ। কোকাকোলার প্রতিনিধি জানান যে পরিমাণ ট্যাক্স দেওয়া লাগে এতে কোকাকোলার লাভ থাকে না।
জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে টোব্যাকো ও বেভারেজ নিয়ে চাপ আছে। মূলত ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা শুল্ককর ও কাস্টমস সংক্রান্ত কী ধরনের সমস্যায় পড়েন, তা শুনতেই এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে এসব অভিযোগ জানালেও ব্যবসায়ীরা এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সামনে সরাসরি তাদের অভিযোগগুলো জানিয়েছেন।