২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হতে চলেছে গঙ্গার পানিচুক্তি। কিন্তু পানিচুক্তি পুনর্নবায়নের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এখনো শুরু হয়নি।
শুক্রবার ভারতের সংসদে এ কথা জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং। এদিন লোকসভায় বিজেপি সংসদ সদস্য জগন্নাথ সরকারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারসহ সব স্টেকহোল্ডার্স’দের কাছ থেকে খাবার পানি এবং শিল্পে ব্যবহৃত পানির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে মতামত পাওয়া গেছে। সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রণয়নের সময় এগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে।’
বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের লিখিত প্রশ্নে জানতে চান, আগামী বছর মেয়াদ শেষ হতে চলেছে গঙ্গার পানি চুক্তির। ফলে সেই চুক্তির পুনর্নবায়নের জন্য ভারত ও বাংলাদেশ সরকার উচ্চ স্তরের প্রযুক্তিগত আলোচনা শুরু করেছে কি না? গত মার্চে বাংলাদেশ নদী কমিশনের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের পশ্চিমবঙ্গ সফর, ওই সফরে ফারাক্কা ব্যারাজ পরিদর্শন এবং কলকাতায় বৈঠকের ফলাফল, এসব ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারসহ সব স্টেক হোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে কি না?
ওই প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানি চুক্তির বিষয়ে, দুই দেশের মধ্যে এ চুক্তির পুনর্নবায়নের জন্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এখনো শুরু হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি)-এর কাঠামোর অধীনে পারস্পরিক স্বার্থের সব পানিসম্পর্কিত বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কারিগরি স্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং ২০২৫ সালের মার্চ মাসে সর্বশেষ এ ধরনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে যৌথ পর্যবেক্ষণ ও তথ্য ভাগাভাগি করার জন্য একটি কাঠামোগত প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা হয়।’
কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, উপরোক্ত আলোচনার প্রস্তুতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নিয়মিতভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে চলেছে। এ বিষয়ে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ, ওই বছরেরই ৩১ মে এবং ২০২৫ সালের ২৬ মার্চ আন্তমন্ত্রণালয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একজন অনুমোদিত প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে একটি সম্মিলিত ধারণা তৈরি করা হয়েছিল। ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারসহ সব স্টেকহোল্ডারে কাছ থেকে খাবার পানি ও শিল্পে ব্যবহৃত পানির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রণয়নের সময় এগুলো বিবেচনায় রাখা হবে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছরের। আগামী বছর ২০২৬ সালে সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।