বাংলাদেশ পুলিশকে জনবান্ধব ও মানবিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সংস্কারের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির ‘বাংলাদেশ পুলিশ সংস্কার : প্রেক্ষিত নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ বক্তব্য উঠে এসেছে।
গতকাল সংগঠনের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ড. এম আকবর আলীর সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ড. মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ‘পুলিশের কাজের ওপর নিরপেক্ষভাবে নজরদারি নিশ্চিত করতে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি। এ কমিশনে সাবেক ও বর্তমান বিচারপতি, সরকারি কর্মকর্তা, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, নারীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি থাকবেন।’
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ সংস্কার করতে হলে পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। বেঁচে থাকার মতো সুযোগসুবিধা দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। প্রশিক্ষণ আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘পুলিশকে কখনো ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থরক্ষার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। এজন্য পুলিশের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে।’
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য জারিফ রহমান বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন থেকে পুলিশ সংস্কার বাদ দেওয়া জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে এক ধরনের বেইমানি।’
সাবেক বিচারপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে পুলিশের ভূমিকার কারণেই পুলিশ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘পুলিশকে শুধু ব্যবহার করা হয়। পুলিশে অনেক ভালোমানুষ আছেন যারা পরিবর্তন চান। পুলিশকে ভালো হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।’
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘পুলিশের নিয়োগব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। পুলিশ সদস্যদের সম্মানজনক বেতন-ভাতা দিতে হবে।’
বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ‘শেখ হাসিনা পুলিশকে গণশত্রুতে পরিণত করেছিল।’ তিনি পুলিশ সদস্যদের পদায়নের ক্ষেত্রে ফিট লিস্ট করার সুপারিশ করেন।
ড. এম আকবর আলী বলেন, ‘১৮৬১ সালের পুলিশ আইনে নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে। পুলিশের জনসম্পৃক্ততার কথা নেই। পুলিশকে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের আওতায় আনতে হবে। পুলিশের মনোবল বৃদ্ধির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।’
সংগঠনের সহসভাপতি মো. আবদুর রহমান খানের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা।