‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের ফেজ-৩’ ও ‘মেঘনা নদী রক্ষায় মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন ১০ বছর ধরে আটকে থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে প্রকল্পের অবস্থা জানার পর বিস্ময় প্রকাশ করেন ও দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের তিনি নির্দেশ দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা শহরের মানুষের জন্য টেকসই পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে দিন দিন আমরা পরিবেশকে বিরাট হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছি। অথচ, সংকট থেকে উত্তরণের রাস্তা থাকা সত্ত্বেও সে কাজটা এত বছর ধরে করা হয়নি! তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অতি দ্রুত দাপ্তরিক কাজ শেষ করে চলতি অর্থবছরের মধ্যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার পাশে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী দূষণের কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দেশের অন্য নদীগুলোও বিভিন্ন রকমের সংকটে রয়েছে। এ অবস্থায় মেঘনা নদীকে রক্ষা করা সরকারের অগ্রাধিকার। এটাকে বাঁচাতে দ্রুত কাজ শুরু করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, ঢাকা শহরে ৭০ শতাংশ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতি বছর প্রায় ২-৩ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ সংকট মোকাবিলায় মেঘনা নদীর পানি ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্পে (ফেজ-৩)’ পরিশোধন করে ঢাকায় সরবরাহ ও মেঘনা নদী রক্ষা মহাপরিকল্পনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ প্রকল্পে সহায়তা করছে। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১০ বছর আগে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়। পরিকল্পনার কাজ সম্পন্ন হলেও বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়নি। বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগ, ঢাকা ওয়াসা, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।