ভোটের রাজনীতি সামনে রেখে ইফতার মাহফিলের মোড়কে পবিত্র রমজান মাসে এবার জমবে ইফতার রাজনীতি। দেশের প্রধান বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি, অন্যতম দল জামায়াতে ইসলামী, নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ দেশের রাজনৈতিক ইফতারের আগে সভার মাধ্যমে তাদের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচন কিংবা সংস্কারের কথা তুলে ধরবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে রমজান মাসজুড়ে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল করবে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলে দলের সব ইউনিটকে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দ্রুত সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। জানা গেছে, এসব ইফতার মাহফিল ও সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রদের নতুন দলসহ সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের দাওয়াত করা হবে না। এ ছাড়া রমজান মাসে অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেবে না বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে দলীয় কর্মসূচি না থাকলেও সাংগঠনিক অবস্থা জোরদার করা হবে ইফতার কর্মসূচির মাধ্যমে। দলমত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করব। একে অন্যের খোঁজখবরের পাশাপাশি থাকবে রাজনীতিও। সারা দেশেই দল ইফতার আয়োজন করবে। যেখানে গুরুত্ব পাবে দলের সাংগঠনিক অবস্থা, নির্বাচন ও সমসাময়িক রাজনীতি।
বিএনপির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এবারই হবে বিএনপির স্বস্তির ও গোছানো ইফতার আয়োজন। প্রতিবারের মতো প্রথম রমজানে আজ রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এতিম ও আলেমদের সম্মানে প্রথম ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিএনপি। আগে এ অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু কারাবাস ও অসুস্থতার কারণে গত কয়েকটি বছর তিনি থাকতে পারছেন না। এবারও তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেড় মাস ধরে লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন। দ্বিতীয় ইফতারটি হবে ৬ মার্চ কূটনীতিকদের সম্মানে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বাকি দুটি ইফতার হবে রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের সম্মানে। প্রতি রোজায় থাকবে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ইফতার মাহফিল। রাজধানীতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি ছাড়াও প্রতিটি থানাভিত্তিক এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে থাকবে ইফতার মাহফিলের আয়োজন। দেশের সাংগঠনিক ১০ বিভাগ, জেলা, থানা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়েও বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিল করবে।
অন্যদিকে জামায়াতের তরফ থেকেও প্রায় একই ধরনের ইফতারের আয়োজন করা হবে। যেখানে বিএনপিসহ ছাত্র সমন্বয়কদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। দীর্ঘদিন পর মুক্ত পরিবেশে ইফতার আয়োজন করতে যাচ্ছে দলটি। কেন্দ্র থেকে শুরু করে সারা দেশে গুরুত্ব দিয়ে ইফতার আয়োজন করছে দলটি। এ ছাড়াও জাতীয় পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, অন্যতম ইসলামী দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জেএসডি, জাকের পার্টি, বাসদ, বিজেপি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, এনপিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, বিএনএম, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন ইফতারের আয়োজন করছে।