বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার পালালেও গণতন্ত্র এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ক্রমাগত অব্যাহত রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা নানা কৌশলে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টায় লিপ্ত। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে দায়বদ্ধ সংসদ এবং সরকার যতক্ষণ না গঠিত হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়।
শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালি বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। এ সময় তিনি বলেন, সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু এটি কোনো একটি দেশের জনসংখ্যার চরিত্র-বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য কেবল একটি শব্দ মাত্র। এই বাংলাদেশ আপনার-আমার- আমাদের সবার। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সব ক্ষেত্রে সমধিকার ভোগ করবে। এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি।
বিপ্লব দে পার্থ ও রাজীব ধর তমালের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু চৌধুরীসহ বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের সাধুসন্ন্যাসী, জেলা ও আঞ্চলিক কমিটির নেতারা।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে দলমত, ধর্ম-দর্শন যার যার। রাষ্ট্র কিন্তু সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার। সুতরাং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য, আমাদের সবার সামনে আগামী জাতীয় নির্বাচন একটি বড় সুযোগ। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ধর্মবর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য একটি নিরাপদ গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে বিএনপি আপনাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা চায়।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৭ বছর আপনাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে এই গভীর সত্যটি যদি সনাতনী ধর্মের অনুসারীরা বুঝতে পেরে থাকেন, অবশ্যই এটি আপনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি। একটি সমৃদ্ধ এবং মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে আপনাদের এই উপলব্ধি আগামী দিনে আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, পলাতক যে স্বৈরাচারের বর্বর শাসনামল ছিল, সে শাসনামলে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর যাদের আয়নাঘরের নির্জন অন্ধকারে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত মৃত্যু আতঙ্কে কাটাতে হয়েছে, তাদের সবাই কিন্তু কথিত সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর সদস্য। কিন্তু এই পরিচয়, তাদের সম্মান এবং নিরাপত্তা কিছুই নিশ্চিত করতে পারেনি। একটি রাষ্ট্র এবং সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন রয়েছে কি না, সেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রে যদি আইনের শাসন না থাকে, তাহলে সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু কেউ নিরাপদ নয়।