এবারের ঈদে অনেক নাটকের ভিড়ে আগ্রহ নিয়ে দর্শক মুখিয়ে ছিলেন জাকারিয়া সৌখিন পরিচালিত ‘প্রিয় প্রজাপতি’ নাটকটি দেখার জন্য। এটি প্রচার হয় বসুন্ধরা টিস্যুর পরিবেশনায় ‘ক্যাপিটাল ড্রামা’ ইউটিউব চ্যানেলে। নাটকটি দর্শক প্রত্যাশা পূরণ করেছে বলে অধিকাংশ দর্শকের কাছ থেকে মত পাওয়া গেছে।
সকালের হালকা রোদে বেলকনিতে দাঁড়িয়েছিলেন মুগ্ধ। তার চোখে-মুখে এক অনাবিল প্রশান্তি। হঠাৎ কোথা থেকে উড়ে এসে তার বাম হাতে বসল এক মায়াবী প্রজাপতি। সেই প্রজাপতিকে দেখে মুগ্ধ এতটাই বিমোহিত হলেন, তার ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে দিলেন। ক্যাপশনে লিখলেন এক অদ্ভুত ভালোবাসার উক্তি, ‘প্রিয় প্রজাপতি, রংধনুর রঙের ডানায় উড়ে এলো, বলল গুড মর্নিং। কিন্তু আমার হাতে প্রজাপতি কেন? বিলিভ মি। বিয়ে-শাদি করার কোনো প্ল্যান নেই আমার।’ এরপর অফিসের বাসে ওঠার জন্য রওনা দেন তিনি। বাসে উঠে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েন মুগ্ধ, আর অজান্তেই তার মাথা হেলে পড়ে জানালার পাশে বসা এক তরুণীর কাঁধে। মুগ্ধ তখনো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ভালোবাসার এক নতুন গল্প শুরু হওয়ার অপেক্ষায়। অফিসে পৌঁছে ঘুম ভাঙতেই প্রথম যে মুখটি তিনি দেখলেন, তাতেই যেন আবারও মুগ্ধ হলেন। আর যখন জানতে পারলেন, নতুন জয়েন করা ওই তরুণীর নাম ‘প্রজাপতি’, তখন বিস্ময় আর ভালোবাসার এক মিষ্টি ঢেউ খেলে গেল তার মনে। এভাবেই খুনসুটি, মান-অভিমান আর ভালোবাসার এক স্নিগ্ধ পরশ নিয়ে শুরু হয় ঈদের বিশেষ রোমান্টিক নাটক ‘প্রিয় প্রজাপতি’। একটি অফিসগামী বাস, অফিসের চিরচেনা পরিবেশ আর দুই সহকর্মীর মাঝে দানাবাঁধা এক মিষ্টি সম্পর্ককে কেন্দ্র করে এগোতে থাকে নাটকের গল্প। মুগ্ধ তার অব্যক্ত অনুভূতি প্রকাশ করতে দ্বিধাগ্রস্ত, ভালোবাসার কথা যেন বারবারই আটকে যায় তার ঠোঁটের ডগায়। এমন সময় অফিসের বিগ বস জানান, সবাইকে নিয়ে পিকনিকে যাওয়া হবে। পিকনিকে উন্মুক্ত পরিবেশে মুগ্ধ কণ্ঠে তুলে নেন সুর- ‘প্রজাপতি এনে দিতে পারি, তুমি কি পরবে খোঁপায়? রংধনু হয় আরও রংবাহারি। তোমার দেখা যদি পাই।’ মুগ্ধ তখন ভালোবাসার এক মিষ্টি লজ্জায় রাঙা হয়ে ওঠেন। জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও তাসনিয়া ফারিণের অনবদ্য অভিনয় জুটি এই নাটকটিকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইনের ‘বিলবোর্ড’ গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জাকারিয়া সৌখিন অত্যন্ত নিপুণভাবে নির্মাণ করেছেন এই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া ভালোবাসার আখ্যান। নাটকটি যখন শেষ হলো, অজান্তেই দর্শকের চোখের কোণে জল জমে গেল।
নাটকের ‘প্রজাপতি এনে দিতে পারি’ গানটি লিখেছেন সোমেশ্বর অলি, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন জাহিদ নীরব। আতিয়া আনিসা এবং নীরব দুজনের কণ্ঠে গানটি যেন ভালোবাসার এক অমর সৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে। নাটকের প্রতিটি গান, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, গল্প আর অভিনয় সবকিছুই ছিল মনোমুগ্ধকর, যা বারবার মনে করিয়ে দেয় ভালোবাসার গভীরতাকে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক