কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁর ‘আমার গোপন প্রেম’ কবিতায় লিখেছেন- ‘প্রকাশিত প্রেমের তুলনায় অপ্রকাশিত গোপন প্রেমই ভালো/যাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করবে, তাকে আমি গোপনে ভালোবাসবো/যাকে ভালোবাসি তাকে কখনো তা জানতে দেবো না।’ যদিও সব প্রেম গোপনে হয় না, তবে কিছু প্রেম গোপনই থেকে যায়। বিশ্বের অনেক আলোচিত তারকা বিভিন্ন সময় একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে গোপন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু শেষতক আর সেসব সম্পর্ক পূর্ণতা পায়নি। দেশিবিদেশি তারকাদের এমন কিছু গোপন প্রেমের কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ
জাফর ইকবাল-ববিতা
চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় জুটি ববিতা-জাফর ইকবাল। একসময় এ দুই তারকার গোপন প্রেম নিয়ে গুঞ্জন চাউর ছিল চলচ্চিত্রপাড়ায়। ১৯৭৩ সালে ‘অন্তরালে’ চলচ্চিত্র দিয়ে জুটিবদ্ধ হন তারা। ১৯৭৫ সালে ইবনে মিজানের ‘এক মুঠো ভাত’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যায় এ জুটি। কিন্তু সত্তরের শেষ দিকে কোনো পরিণতি ছাড়াই ভেঙে যায় জনপ্রিয় এ দুই তারকার প্রেমের সম্পর্ক। কথিত আছে, জাফর ইকবাল তার জনপ্রিয় গান ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী’ গানটি ববিতার জন্যই গেয়েছিলেন।
অমিতাভ বচ্চন-রেখা
অমিতাভ বচ্চন ও রেখা। প্রেমের কারণে বেশ আলোচনায় ছিলেন তারা। ‘দো আনজানে’ ছবির শুটিংয়ের সময় সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয় তাদের। যদিও অমিতাভের ঘরে তখন ছিল তার স্ত্রী অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। এক-দু’কান করে এ গোপন প্রেমের খবর যখন পৌঁছে যায় জয়ার কানে, তখন রেখাকে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, অমিতাভকে তিনি কখনই ছাড়বেন না। ১৯৮২ সালে ‘কুলি’ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে অমিতাভ বচ্চন গুরুতরভাবে আহত হওয়ার পর রেখার সঙ্গে তার গোপন প্রেমের ইতি ঘটে।
শবনম-রহমান
শবনম-রহমান জুটি, ষাট দশকে নির্মাতা মুস্তাফিজের ‘হারানো দিন’ সিনেমার মাধ্যমে জুটিবদ্ধ হন তারা। চলচ্চিত্রে একসঙ্গে কাজ করতে গিয়েই রহমান প্রেমে পড়েন শবনমের। মনের কথা শবনমকে জানালে তিনিও তাতে রাজি হন। অনেক বছর এ জুটি চুটিয়ে প্রেম করে, শেষ পর্যন্ত পরিবারের ইচ্ছাতে শবনমকে বিয়ে করতে হয় সংগীত পরিচালক রবিন ঘোষকে।
উত্তম-সুচিত্রা
উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন জুটির মধ্যে গভীর গোপন প্রেম ছিল। অনেকের মতে, গোপনে বিয়েটাও সেরে নিয়েছিলেন তারা। যদিও এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ জুটি অভিনীত ও উত্তম কুমার প্রযোজিত ‘অগ্নিপরীক্ষা’ চলচ্চিত্রের পোস্টার প্রকাশ হওয়ার পর দুজনের প্রেম নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা শুরু হয়। পোস্টারটিতে লেখা ছিল- ‘আমাদের প্রণয়ের সাক্ষী হলো অগ্নিপরীক্ষা’। উত্তমের স্ত্রী গৌরী দেবী এ পোস্টার দেখে ভীষণ কেঁদেছিলেন। এ ছাড়া সুচিত্রার বাড়ির এক পার্টিতে উত্তমের সঙ্গে তাকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় নাচতে দেখে ছুরি নিয়ে মারতে গিয়েছিলেন সুচিত্রার স্বামী দিবানাথ। এসব কারণে তাদের প্রেম আর প্রণয়ের পথে হাঁটতে পারেনি।
দিলীপ কুমার-মধুবালা
দিলীপ কুমার ও মধুবালা, বলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘মুঘল-ই-আজম’ সিনেমায় তাদের প্রেম নজর এড়াতে পারেনি অফস্ক্রিনের দর্শকদেরও। সে সিনেমায় দিলীপের বিখ্যাত ডায়ালগ ‘মেরে আঁখোসে মেরে খোঁয়াব না ছিনিয়ে শাহজাদী, ম্যায় মার যায়ুঙ্গা’- দেখলেই বোঝা যায় হৃদয়ে কতটুকু ভালোবাসা থাকলে এত গভীরতা দিয়ে ডায়ালগ বলা যায়। দিলীপের সঙ্গে বিয়ে হয়েই যাচ্ছিল মধুবালার। কিন্তু বাদ সাধের মধুবালার পিতা আতাউল্লাহ খান। দিলীপের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিয়ে ভেঙে দেন তিনি।