শারদীয় দুর্গোৎসব ও টানা সরকারি ছুটি ঘিরে লাখো ভ্রমণপিপাসুদের ঢল নেমেছে কক্সবাজারে। বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও উচ্ছ্বাসে মেতেছেন তারা। আর সমুদ্রসৈকতে দেশের বৃহৎ প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে নিরাপত্তার চাঁদরে ঘিরে ফেলেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে দেশে সবচেয়ে বড় জমায়েত হয় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। বিকাল ৪টার পর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে থেকে প্রতিমাগুলো বিসর্জনের জন্য কক্সবাজার সৈকতে আনা শুরু হয়েছে। সৈকতের বিশাল মঞ্চে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু বলেন, প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বৃহৎ এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আজকের এই বিশেষ দিনে এখানে এসে জড়ো হয়েছেন। আশা করছি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আজকের আয়োজন শেষ হবে। জেলার ৭টি উপজেলার মণ্ডপের প্রতিমা ট্রাকবোঝাই করে সৈকতে আনা হয়েছে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা থেকেও নিয়ে আসা হয়েছে প্রতিমা। চকরিয়া ও পেকুয়ার মণ্ডপগুলোর প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে মাতামুহুরী নদীতে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের ৯০ শতাংশের বেশি কক্ষ আগাম বুকিং রয়েছে। এদিকে, পর্যটকদের উপস্থিতি লক্ষ্য করে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক বিশ্বাস আকন্দ বলেন, টানা ছুটিতে কক্সবাজার এসেছি। কিন্তু গত দুইদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে কক্সবাজারে। সমুদ্রস্নানে এসে বৃষ্টিরসস্নান উপভোগ করছি।
দেশের বৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। তাই পুরো সৈকত এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাঁদরে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সমুদ্রসৈকতে সেনাবাহিনী টহলের পাশাপাশি সৈকত এলাকায় তৈরি করেছে নিরাপত্তা বেষ্টনী। আর বিশাল বালিয়াড়িতে চালানো হচ্ছে মাইন সুইপিংয়ের কার্যক্রম। একই সঙ্গে সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে দায়িত্বপালন করছে নৌবাহিনীর ডুবুরি দল। সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে র্যাব, পুলিশ ও কোস্টগার্ড। আর লাইফ গার্ড সংস্থা বলছে, সৈকতে ৫০ জনের অধিক লাইফগার্ড কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।
নৌবাহিনীর ডুবুরি কর্মকর্তা লে. এসএম বেলাল হোসেন বলেন, বিপুল মানুষের সমাগম হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। তাই সমুদ্রে দুর্ঘটনা এড়াতে নৌবাহিনীর ডুবুরী দল নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চার দিন ছুটি থাকায় রেলের ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে যাত্রীদের টিকিটের চাহিদা বাড়ায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ৪ অক্টোবর পর্যন্ত এই রুটে ‘ট্যুরিস্ট এক্সপ্রেস’ নামের একজোড়া ট্রেন চালু করেছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম