বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি গতকাল সন্ধ্যায় মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ৬৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। পূর্বাভাস অনুযায়ী এটি রাতের মধ্যেই ভারতের ওড়িশা ও সংলগ্ন অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করার কথা। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলে ঝড় ও ভারী বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।
মার্কিন নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার জানায়, এটি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার মধ্যবর্তী উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। এতে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘শক্তি’। গতকাল সকালে এটি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। সংস্থাটির বার্তায় আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের পুবদিকে এবং এটি কলকাতা থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। সেখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ায় ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে। এটি অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার মধ্যবর্তী উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর এখনো একে ‘গভীর নিম্নচাপ’ হিসেবেই গণ্য করছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সরাসরি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে না। তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩৫, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছিল। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল ছিল। এমন পরিস্থিতিতে আগেই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।