সেভেন সিস্টারস নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে নয়াদিল্লির নিষেধাজ্ঞার কষাঘাতে। পাঁচটি স্থলবন্দর দিয়ে ওই রাজ্যগুলোয় কোনো বাংলাদেশি পণ্য পাঠানো যাবে না- এ নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ হয়েছে পুরো বাণিজ্য। কারণ সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোতে সরাসরি নৌপথে পণ্য পাঠানোর সুযোগ নেই। নৌপথে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও তা বাংলাদেশের কোনো উপকারে আসছে না।
ভারতের সিদ্ধান্তে যে পাঁচটি বন্দর নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে, সেগুলো দিয়েই মূলত সেভেন সিস্টারসে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হয়। ফলে ভারতের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞায় সেভেন সিস্টারসে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। কলকাতা দিয়েও সাত রাজ্যে পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে না, কারণ এতে পরিবহন ব্যয় ও পণ্য ছাড়ের সময় দুটোই বেড়ে যাবে, যা বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞায় না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করার তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। স্মর্তব্য, প্রায় ৮ কোটি মানুষের বিরাট বাজার হচ্ছে সেভেন সিস্টারস খ্যাত সাত রাজ্য- আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, অরুণাচল, নাগাল্যান্ড ও মণিপুর। এর মধ্যে ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় এবং মিজোরাম এই চার রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি সীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের। পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে ওই চার রাজ্যের সীমান্ত বন্দরগুলোতে। গত শনিবারের এই নিষেধাজ্ঞার পর থেকে সীমান্তের এপারে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকে আছে। ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সোমবার সিলেটের শেওলা স্থলবন্দর থেকে পণ্যবোঝাই ১১টি ট্রাক ফিরে গেছে। ভারতের ওপাশে সুতারকান্দি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ না পাওয়ায় রপ্তানিকারকরা পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো স্থলবন্দর থেকে ফিরিয়ে নেন। বাংলাদেশ ভারত প্রতিবেশী দেশ। স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে সেভেন সিস্টারসের ভোক্তারা। বাণিজ্য ক্ষেত্রে দুই দেশের ভুলবোঝাবুঝি নিরসনে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে, এমনটিই প্রত্যাশিত।