বিশিষ্ট অর্থনীতি বিশ্লেষক, বিশ্বব্যাংকের (বাংলাদেশ) সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের যে প্রস্তাব তা কেউই পরিষ্কার করছে না। এমনকি এটা নিয়ে যারা কাজ করছেন, তারাও তা পরিষ্কার করতে পারছেন না যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তটা কী রকম।’ তিনি বলেন, ‘গত নয় মাসে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি।’
ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবশ্যই হতে হবে। তা না হলে মানুষের প্রতি মানুষের আর কোনো বিশ্বাস থাকবে না। জুলাই আন্দোলন এবং তার আগে বছরের পর বছর গুরুতর অপরাধ করেও অপরাধীদের আদালতে দাঁড়াতে হচ্ছে না। তারা মনে করছেন, তারা নিরপরাধ। অথচ এ ভাবনাটাও একটা অপরাধ। তিনি বলেন, রাষ্ট্র মেরামত ও পরিচালনা করতে চাওয়া তো ছাত্রদের অন্যায় আবদার হতে পারে না।
সম্প্রতি বনানীতে তাঁর নিজ বাসভবনে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ড. জাহিদ হোসেন এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মানিক মুনতাসির। পাঠকের জন্য সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো :
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনার দৃষ্টিতে দেশ কেমন চলছে? আমরা কি সঠিক পথে আছি বলে মনে করেন?
ড. জাহিদ হোসেন : ৫ আগস্টের আগের কথা যদি আপনি চিন্তা করেন এবং এটাকে যদি মানবদেহের সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে বলতে হবে গায়ে ব্যথা, পেটের অসুখ, লাংয়ের সমস্যা ইত্যাদি ব্যাধি ছিল শরীরে। সবচেয়ে বড় ভয়ানক কষ্টের যে জায়গা ছিল, শ্বাসরুদ্ধকর একটা অবস্থা। হিসাবনিকাশ ছাড়া কথা বলা যাচ্ছিল না। ৫ আগস্টের পর সেই শ্বাসকষ্টটা আমি অন্তত বোধ করছি না। এমনকি সে সময় নিজেদের মধ্যেও সেলফ সেন্সরশিপ ছিল।
৫ আগস্টের পর অর্থনৈতিক দিক থেকে একটা লন্ডভন্ড অবস্থার মধ্যে ছিলাম। সেখান থেকেই বর্তমান সরকার কাজ শুরু করেছে। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, প্রশাসনিক অচলাবস্থা কাটাতে সময় লেগেছে। এখনো সেগুলোর রেশ রয়ে গেছে। এতে নানান রকম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আসলেই কঠিন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আমরা এখন কোন অবস্থানে রয়েছি?
ড. জাহিদ হোসেন : এখন যদি অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করি, তাহলে বলব কিছু জায়গায় আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় আমরা এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। এর মধ্যে উৎপাদন বেড়েছে, তেমন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। রপ্তানি ও বহির্বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ খুব একটা বাড়েনি, তবে পতনের ধারা ঠেকানো গেছে। মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু যেখানে এখনো কোনো পরিবর্তন দৃশ্যমান নয়, তা হচ্ছে বিনিয়োগের ক্ষেত্র। আমাদের গ্যাসের সংকটটা এখনো রয়ে গেছে। আর রাজনৈতিক, প্রশাসনিক জায়গা থেকে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : গত মাসে অন্তর্বর্তী সরকার একটা বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে। সেটা বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য কতটা সহায়ক ছিল?
ড. জাহিদ হোসেন : আয়োজনে অনেক নতুনত্ব ছিল। এবারের মডেলটা বেশ ভিন্ন ছিল। কিন্তু শুধু বিনিয়োগ সম্মেলন করেই যে বিনিয়োগ পেয়ে যাব ব্যাপারটা সে রকম নয়। বিনিয়োগ করতে চাইলে বিডা, বেপজা, বেজা এগুলোর কাছে তো কেউ আসবে। এগুলো এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে হবে। সে কাজটাই বোধ হয় এখন হচ্ছে। টেকনোলজির ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সব সংস্থাকে একসঙ্গে আনতে হবে। একজন বিনিয়োগকারী যেন এক জায়গায় গেলেই সবকিছু পেয়ে যান।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : অর্থনৈতিক দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে যেসব রিফর্ম চলছে তাতে আপনি কতটা আশাবাদী?
ড. জাহিদ হোসেন : এটা নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকার কতটা পারবে, আর ভবিষ্যৎ সরকার তা ধরে রাখবে কি না। দেখুন, যেমন পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, এখানে যদি রিফর্ম ঠিকঠাকমতো না হয় তাহলে দুর্নীতি থামবে কী করে। পলিটিক্যাল জায়গাটা যদি ঠিক করতে না পারেন, সেখানে যদি ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে না পারেন তাহলে তো সেখান থেকেই দুর্নীতি হবে। দুর্নীতির সূত্রপাত তো সেখান থেকেই হয়। এই ধরুন, মগজটা যদি ঠিক না হয়, তাহলে শরীরটা কীভাবে ঠিক হবে। প্রশাসনিক সংস্কার আমরা গত ৫০ বছরেও করতে পারিনি। এখন সীমিত সময়ের মধ্যে কতটুকু করতে পারব সেটাও প্রশ্ন। তবে কিছু জায়গায় তো রিফর্ম হচ্ছে। যেমন ব্যাংকিং খাত ছিল লুটপাটের আখড়া। সেখানে রক্তক্ষরণটা বন্ধ হয়েছে। কিছু জায়গায় পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, রেগুলেশনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেসব সার্কুলার জারি করা হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে। ব্যাংকিং রেজুলেশন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এটা খুবই জরুরি ছিল। আরেকটা আইন লাগবে, ডিপোজিটরদের প্রটেকশন দেওয়ার আইন। সেটার খসড়া রেডি করা হয়েছে। এখন মতামত নেওয়া হচ্ছে। এগুলো সবই তো পস্তুতি। ফলে এর বাস্তবায়নটা করতে হবে। এখানে এসে যদি আমরা থেমে যাই তাহলে তো আর কিছুই হবে না। এ সরকার যদি দুই-একটা জায়গায় একটা মডেল দাঁড় করাতে পারে, তাহলে সেটা দেখেও পরবর্তী সরকার এসে কাজ করতে পারবে। সে কমিটমেন্টটা থাকতে হবে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিডার চেয়ারম্যানকে নিয়ে ব্যাপক হইচই হয়েছে, কীভাবে দেখছেন?
ড. জাহিদ হোসেন : তিনি চেষ্টা করছেন। তাঁর স্বপ্ন আছে। সে স্বপ্ন বোধ হয় বাস্তবভিক্তিকও। এই যে ১০০ ইকোনমিক জোনের বদলে মাত্র ১০টি করা হচ্ছে, এটা প্রাইয়োরিটাইজেশন। এটা অবশ্যই রাইট ট্র্যাক। আগে বুঝতে হবে সক্ষমতা কতটুকু। নিজের পরিকল্পনা যদি সক্ষমতার চেয়ে বেশি হয় তাহলে কোনোটাই পরিসমাপ্তির মুখ দেখবে না। আমাদের সিলেকটিভ হতে হবে। যেহেতু আমাদের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তটা কী বলে মনে করেন?
ড. জাহিদ হোসেন : আচ্ছা বলুন তো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, এটা কী জিনিস? কেউ বলতে পারেন, কী সেটা। বর্তমানেরটা নাই। যেটা ছিল, সেটা তো অচল, বাতিল। তাহলে নতুন যে বন্দোবস্ত সেটা কই, কোথায়, কী রকম? সেটার একটা পরিষ্কার ধারণা তো আমরা দিতে পারি নাই। যাঁরা এটা নিয়ে কাজ করছেন, তাঁরাও তো সেটা দেখাতে পারছেন না। তাহলে পরিবর্তনটা আসবে কীভাবে? যেসব নতুন হয়েছে বা হচ্ছে সেগুলো কি যথেষ্ট? তাদের কতটুকু সক্ষমতা রয়েছে? মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে সেটার মিল কতটুকু?
বাংলাদেশ প্রতিদিন : কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রাজনৈতিক ব্যবহারের কারণেই তো আর্থিক খাত ভেঙে পড়েছে। এটা বন্ধ করার উপায় কী?
ড. জাহিদ হোসেন : এখানে তো প্রশাসনিক বা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সংস্কার আমি দেখছি না। শুধু এনবিআরের (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে সেটাই। এ ছাড়া তো আর কোনো কিছু দেখছি না। সর্বোচ্চ জায়গা থেকে পরিবর্তন না এলে সেটা তো সম্ভব নয়। বর্তমান অবস্থায় তো মেধাবীদের কোনো গুরুত্ব নাই। সবখানে লয়ালিটিটাই গুরুত্ব পায়। আপনি কতটা অনুগত সে অনুপাতেই আপনাকে পোস্টিং দেওয়া হয়। এজন্য এটা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগের যে অবস্থান ছিল, সেখানে ফিরতে হবে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : জুলাই আন্দোলন এবং এতে যে গণহত্যার অভিযোগ এসেছে বলে প্রতীয়মান, এর বিচারের বিষয়ে আপনার মতামত কী?
ড. জাহিদ হোসেন : এ বিচারটা তো হতেই হবে। কারণ বিচারহীনতার কারণেই মানুষের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেখান থেকেই মানুষ খুবই তুচ্ছ ঘটনায় ছোট কোনো অপরাধীকেও বিরাট শাস্তি দিয়ে দেয়। আবার খুনের অপরাধীরাও পার পেয়ে যায়। অর্থাৎ বিচার না হলে মানুষ তখন নিজের হাতে আইন তুলে নেয়। এতে সমাজে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এখানে একটা বিষয় খুবই দুঃখজনক যে, দিনে দুপুরে খুন করেছে, গুম করেছে, চুরি করেছে, ডাকাতি করেছে; তার পরও তাদের এখন পর্যন্ত আদালতে দাঁড়াতে হচ্ছে না! অতীতে কিন্তু এগুলোই হয়েছে। অন্যায়, অবিচার, খুন, হানাহানি যেগুলো হয়েছে, সেগুলোর যদি দ্রুত বিচার করতে না পারি, দোষীদের শাস্তি যদি না হয়, তাহলে আমরা জনগণকে শৃঙ্খলায় ফেরাতে পারব না। অতএব এগুলোর বিচার খুব দ্রুত হওয়া প্রয়োজন। আর জুলাই আন্দোলনের সময় কী হয়েছে সেটা তো সবাই দেখেছে। পুরো বিশ্বই দেখেছে। এমনকি তার আগের ১৬ বছর কী হয়েছে সেটাও তো পরিষ্কার।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : নির্বাচন নিয়ে আপনার মতামত ও পর্যবেক্ষণ...
ড. জাহিদ হোসেন : নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আলাপ চলছে। সেটার একটা প্রাতিষ্ঠানিক ফর্ম দরকার। পাকিস্তান আমল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যত আন্দোলন হয়েছে, সবকটিতে ছাত্ররাই নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে আমরা কি কোনো শিক্ষা নিয়েছি? রাষ্ট্র মেরামত ও পরিচালনায় ছাত্রদের আবদারকে অন্যায় আবদার হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। অতীতে তো ছাত্র আন্দোলনের পর তারা ক্যাম্পাসে ফিরে গিয়েছিল। কিন্তু মেরামত তো হয় নাই। ফলে এবার তারা নিজেরাই মেরামত করতে চাচ্ছে। করছেও। করুক না। এটা তো অন্যায় আবদার হতে পারে না।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সম্পর্কে কিছু বলুন।
ড. জাহিদ হোসেন : এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন তো না করার কোনো সুযোগ নাই। এটা তো আমাদের করতেই হবে। সময়ের মধ্যে জাতিসংঘ আমাদের সেই তালিকা থেকে বের করে দেবে। লাওস এবং নেপালও তো করছে এ সময়েই। তারা তো আমাদের থেকে ধনী নয়। সরকার তো বলছে আমরা গ্র্যাজুয়েশন পেছানোর জন্য কোনো আবেদন করব না। এখানে আমার পরামর্শ হলো এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর যেসব সুবিধা বহাল থাকবে, সেগুলোর সদ্ব্যবহার করতে হবে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সঙ্গে আমেরিকার বাজারে যাতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক দিতে না হয় সেটা নিয়েও কাজ করতে হবে। সে প্রস্তুতিটা এখনই শুরু করতে হবে। আমাদের প্রস্তুতিটা হতে হবে সামগ্রিক। কোনো একটা দেশকে টার্গেট করে নয়, বরং সেটা হতে হবে সার্বিক।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : সরকার এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি আলাদা বিভাগ করেছে, এতে রাজস্ব ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী হবে বলে আপনি মনে করেন?
ড. জাহিদ হোসেন : প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বলতে তো অন্তর্বর্তী সরকার এটাই করতে পেরেছে। আর কোনোটাই তো এখনো হয়নি। এটা খুবই জরুরি ছিল। কারণ গত ৫০ বছরে কখনোই আমরা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। এটার পর হয়তো আমরা সেটা করতে পারব। এখন এটার বাস্তবায়ন করা জরুরি। যদিও কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী এটা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : সামনে নতুন বাজেট। এটা একটা বিশেষ ধরনের সরকার। আপনার প্রত্যাশা কী?
ড. জাহিদ হোসেন : এবারের প্রেক্ষাপটে আমরা একটা ভিন্ন ধরনের বাজেট আশা করি। একটা শব্দ আমি শুনতে চাই না, সেটা হলো ‘উচ্চাভিলাষী বাজেট’। কিন্তু আমার মনে হয়, আমরা তা এবারও শুনব। কারণ চলমান বাজেটটাই তো উচ্চাভিলাষী। ফলে অভিলাষ তো আছেই। আগে বলেছিলাম মঙ্গলে যাব। আর এখন বলছি চাঁদে যাব। সেটা কি কম কোনো উচ্চাভিলাষ! আপনি যেটা অর্থায়ন করতে পারবেন না, সেটা বলবেন না। সে বাজেট আপনি করবেন কেন, যে বাজেট আপনি অর্থায়ন করতে পারবেন না।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : ভারত-পাকিস্তান, চায়না-আমেরিকার সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক কূটনীতি পরিস্থিতি কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
ড. জাহিদ হোসেন : আমার তো মনে হয়, এটা একটা খুবই কঠিন সিচুয়েশন। এখানে কাকে রেখে কার সঙ্গে আপনি খাতির রাখবেন। কারণ এখানে তো চায়নার সঙ্গে গেলে ভারত স্বস্তি বোধ করে না। আবার যুক্তরাষ্ট্র-চায়নার সম্পর্কও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। এখানেও মুশকিল। যদিও ট্রাম্প অনেকটা বিজনেস ওরিয়েন্টেড। এজন্য আমাদের সম্পর্কগুলো হতে হবে বিজনেস ওরিয়েন্টেড।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : অন্তর্বর্তী সরকারের নয় মাসে সবচেয়ে বড় অর্জন কী?
ড. জাহিদ হোসেন : ড. ইউনূসের আমলে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কোন্নয়ন। আরেকটা হলো, ভঙ্গুর ও বিশৃঙ্খল আর্থিক খাতে আস্থা ফেরানোর চেষ্টা। দেখুন, ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈশ্বিক শক্তিগুলোর যে সম্পর্ক তা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। শুধু ভারত ছাড়া অন্য সব দেশ বা জোটের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক উন্নতি হয়েছে এ নয় মাসে। তবে ভারত যে একটি দলের বন্ধু নয়, তারা আসলে বাংলাদেশের বন্ধু-দেশটির এমন বক্তব্য তো তারা প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। তাদের কর্মকান্ডেও এটার কোনো প্রতিফলন নেই। বরং ৫ আগস্টের পরদিন থেকেই তারা আমাদের নিয়ে যত রকম প্রপাগান্ডার ধরন আছে সবই করে যাচ্ছে। এখনো করছে। যদিও সেটা তারা স্বীকার করে না। এত প্রতিকূলতার পরও যে আন্তর্জাতিকভাবে এ সরকার একটা অবস্থান করে নিয়েছে, এটা শুধু ড. ইউনূসের ব্যক্তি ইমেজের কারণেই।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ড. জাহিদ হোসেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।