অগ্রহায়ণের প্রথম দিনেই নতুন ধানের মিষ্টি ঘ্রাণে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে দিনাজপুর। সোমবার ভোর থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা, গ্রাম ও পৌর এলাকায় বইছে নবান্নের উৎসবের বাতাস। নতুন ধান ঘরে তোলার আনন্দে সর্বত্র যেন উচ্ছ্বাস আর প্রাণচাঞ্চল্য।
বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ঝগড়ুপাড়া গ্রামে সোমবার ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় নবান্ন উৎসব। গ্রামটিতে আয়োজন করা হয় ১৬টি গরু জবাইয়ের। পরিবারের উঠান, ঘর-দুয়ার, রাস্তা—সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের রঙ। গরুর মাংস ভাগ করে দেওয়া, উঠানে নতুন ধান মেলে শুকানো, মাঠ থেকে দলবদ্ধভাবে ধান কেটে আনা—সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় এক ঐতিহ্যমণ্ডিত গ্রামীণ দৃশ্য।
নবান্নকে ঘিরে গ্রামে গ্রামে তৈরি হয় পিঠা-পুলির উৎসবও। ক্ষীর-পায়েস, চিতই, ভাপা, পাটিসাপটাসহ নানা খাবার তৈরি করে আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া—সব মিলিয়ে গ্রামীণ মিলনমেলার আবহ ছড়িয়ে পড়ে।
শহরেও পিছিয়ে নেই মানুষ। ব্যস্ত নগরজীবনেও নবান্নের টানে বিরামপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাই গ্রামে পরিবার-পরিজন নিয়ে অংশ নেয় অনেকে।
এদিকে আগামী বৃহস্পতিবার বিরামপুর উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের একর, মঙ্গলপুরসহ আরও কয়েকটি গ্রামে নবান্ন উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। উঠানজুড়ে নতুন ধান শুকানোর দৃশ্য যেন আগত উৎসবের বার্তা দিচ্ছে।
নবান্ন উৎসব সম্পর্কে বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘নবান্ন আমাদের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি ও সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। কৃষকের মুখে হাসি ফুটে ওঠায় গ্রামজুড়ে নবান্নের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষক যেন উৎপাদন থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত লাভবান হন, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।’
বিড-প্রতিদিন/সুজন