বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনটি হত্যাকাণ্ডসহ মোট সাতটি মামলার আসামি মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসেন সাগরকে সেনা নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মুন্সীগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয় সাগরকে। এ সময় সেনা সদস্য, পুলিশ ও ডিবি পুলিশসহ বিপুল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল।
পরে কঠোর নিরাপত্তায় সাগরকে মুন্সীগঞ্জ আমলী আদালত-১-এ হাজির করা হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র সজল মোল্লা হত্যা মামলায় পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মো. আশীকুর রহমান শুনানি শেষে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সাগরকে আদালতে আনা হবে—এই খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুর ১টা থেকেই শতাধিক মানুষ আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, সাগরের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিতে থাকে। সাগরকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানে ডিম নিক্ষেপ ও ঝাড়ু দিয়ে আঘাত করার ঘটনাও ঘটে। এক পর্যায়ে সেনা সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করেন।
এর আগে বুধবার রাতে ঢাকার ডেমরা এলাকা থেকে সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ভোরে তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, সাগরের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা ও আরও চারটি মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফিরোজ কবীর বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে যান সাগর। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে কোরিয়ায় আটক হয়ে দেশে ফেরত আসেন তিনি। এরপর গোপনে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। গত এক মাস ধরে নজরদারিতে রাখার পর বুধবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’
মামলার পিপি অ্যাডভোকেট হালিম হোসেন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সজল মোল্লাকে গুলি করেছিল সাগর। পুলিশের তদন্ত ও ভিডিও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে মুন্সীগঞ্জে সমাবেশে হামলার ঘটনায় তিনজন নিহত হন এবং শতাধিক আহত হন। ওই ঘটনায় দায়ের করা তিনটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাত হোসেন সাগর।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক