কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই দুই মাস নিয়ে হেমন্তকাল। হেমন্ত মানেই শিশিরস্নাত প্রহর। হেমন্তকে বলা হয় শীতের বার্তাবাহক। ঋতুর পরিক্রমায় প্রকৃতিতে এখন হেমন্ত এসেছে। এতে সূর্যের প্রখরতা কমতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা আকাশের পর কুয়াশাচ্ছন্ন গোধূলী নামছে। হেমন্তের জয়গানে নীলফামারীতে শীতের আগাম বার্তা বইছে।
দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা আকাশে ধূসর কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে রাতের প্রকৃতি। ভোরের আকাশে টুপটাপ শব্দে শিশিরবিন্দু যেন প্রকৃতির জমিনে টিপ পরিয়ে দিচ্ছে। ধবধবে সাদা মাকড়সার জালেও শিশিরবিন্দু জমিয়ে এক মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্ম তৈরি করেছে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত স্নিগ্ধ-কোমল ও ধূসর কুয়াশার আবহের ঢাকা পড়ছে গ্রামাঞ্চলের পথঘাট ও ফসলি ক্ষেত।
সাতসকালে নীড়ছাড়া পাখির কলকাকলী আর রবির উদিত সোনামাখা রোদ যেন বলে দিচ্ছে আগাম শীতের বারতা। হেমন্তের এমন স্নিগ্ধ সকাল যেন প্রকৃতিজুড়ে সৃষ্টি করেছে এক নতুন আবহ।
পাশাপাশি ফসল উৎসবের ঋতু হেমন্তের হাত ধরে আসা শীতে মাঠে মাঠে আগাম আলুসহ রকমারি সবজি চাষে ধুম পড়েছে। এমন কর্মযজ্ঞে কৃষাণ-কৃষাণীরা বিরামহীনভাবে শীতের আগাম রবিশস্য বুননে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, সকালে পুরো এলাকা কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে। রাতের শয্যায় প্রথম দিকে ফ্যান চালালেও শেষ রাতে শরীরজুড়ে আলতো শীতের শিহরণ জাগছে। ভোর আকাশে পত্রপল্লব ও টিনের চালে মৃদু ছন্দে শিশিরবিন্দু পড়ছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, এবার আগেভাগেই দরজায় উঁকি দিচ্ছে শীত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, হেমন্তকে সবচেয়ে চেনা যায় ভোরের শিশিরে। খুব ভোরের শীতল বাতাস, সবুজ পাতার গায়ে জমে থাকা শিশিরবিন্দু, এক অপার্থিব দৃশ্যমালা রচনা করে। এ সময়ে পাল্টে যায় প্রকৃতি ও মানুষ। ঘাসের ডগায়, ধানের শিষে জমতে শুরু করেছে শিশিরবিন্দু। গ্রামীণ এ জনপদে হালকা শীতের আমেজ দেখা দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কেএইচটি