কক্সবাজারের রামু উপজেলায় দুই শিশুকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিন নারীসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ওসমান গণি এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মীর মোশারফ হোসেন টিটু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, আবদু শুক্কুর, আলমগীর হোসেন ওরফে বুলু, মিজানুর রহমান ও মো. শহীদুল্লাহ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন আবদুল মজিদ বদাইয়া, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা খাতুন ও লায়লা বেগম।
ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি, যখন রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকায় দোকান কর্মচারী মোহাম্মদ ফোরকানের দুই ছেলে, হাসান শাকিল (১০) ও হোসেন কাজল (৮), পাখির ছানা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে অপহরণ করা হয়। অপহরণের পরে পরিবারের কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরিবার পুলিশকে জানায় এবং দুই দিন পর ১৯ জানুয়ারি রাতে স্থানীয় খালের পাড়ে দুই শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আবদুল্লাহ জানান, প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম ১৬৪ ধারায় স্বীকার করেছেন যে মুক্তিপণ না দেওয়ায় ক্ষোভে দুই শিশুকে হত্যা করা হয়। প্রথমে একটি বাড়িতে হত্যা করে মরদেহ ড্রামে রাখা হয় এবং পরে খালের পাড়ে ফেলে দেওয়া হয়।
নিহত দুই শিশুর বাবা মোহাম্মদ ফোরকান আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আদালতের রায়ে আমি খুশি, কিন্তু ছেলেদের তো আর ফিরে পাবো না। ওরা নৃশংসভাবে মেরে ফেলেছে তাদের।”
বেকসুর খালাসপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন হলেন মোকারমা সুলতানা পুতু। প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন, বাকিরা পলাতক।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল