রংপুরের পীরগাছা উপজেলার আরাজি ঝিনিয়া গ্রামের সুনীল চন্দ্র, পুলিন চন্দ্র ও সুশীল চন্দ্র তিন ভাই। দীর্ঘদিন থেকে প্রতিমা কারিগর হিসেবে পরিচিত। বাপ-দাদাসহ পূর্ব পুরুষরা প্রতিমা তৈরির কাজ করতেন। সেই ঐতিহ্য ধরে রেখে পূজার আগে প্রতিমা তৈরি করেন এই তিন ভাই এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
প্রতিমা বিভিন্নস্থানে পূজা মণ্ডপে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। বছরের অন্য সময় তাদের সংসার চলে দিন মজুরি করে। এই তিনভাইকে প্রতিমা তৈরী করছে সাহায্য করেন তাঁদের স্ত্রী-সন্তানরাও। নিজ বাড়িতে প্রতিমা তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হলেও ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। আগে মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে প্রতিমা তৈরি করলেও এখন তাঁদের বাড়িতে তৈরি হয়। এ বছরও প্রায় ৫০টি প্রতিমা তৈরির কাজ করেছেন। এর মধ্যে সব প্রতীমার কাজ প্রায় শেষ করেছেন। ইতোমধ্যে কয়েটি প্রতিমা মণ্ডপে সরবরাহ করেছেন।
তিন ভাইয়ের বাড়িতে গেলে দেখা যাবে, রোদে শুকানো হচ্ছে সারি সারি প্রতিমা। এগুলোতে ছোটখাটো কাজ করছিলেন সুনীলের স্ত্রী ছবি রানী। আবার বাড়ির সব সদস্য ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যস্ত। কেউ কাঠ কাটছেন, কেউ খড় দিয়ে প্রতিমার হাত-পা বানাচ্ছেন। কেউ বা পরিপূর্ণ করে তুলতে ব্যস্ত। সুনীল চন্দ্র বর্মন জানান, আগের থেকে মন্দিরের সংখ্যা কমে গেছে। তাই চাহিদাও কম। দিন দিন বেড়েই চলছে কাঠ, খড়, মাটিসহ সব কিছুর দাম। বেড়েছে প্রতিমার দামও। তাই এখন আর পোষায় না। শুধু শ্রমের দাম উঠলেই হয়। কোনোমতে টিকে আছে বাপ-দাদার এ পেশা। অন্য সময় দিনমজুরি করে সংসার চলে আমাদের।
ভিন্ন ভিন্ন আটটি প্রতিমা মিলিয়ে এক সেটের মজুরি নিচ্ছেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এক সেট প্রতিমা তৈরিতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। এতে দুর্গার সঙ্গে রয়েছে অসুর, সিংহ, মহিষ, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও লক্ষ্মী প্রতিমা।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল