কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নিজ বাড়ির প্রায় ২০০ মিটার দূর থেকে নাছিমা খাতুন (৪০) নামে এক গৃহবধূর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের দুধকুমড়া এলাকার মরা কালিগঙ্গা নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গৃহবধূ ওই এলাকার দিনমজুর মহেদ আলীর স্ত্রী। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
তবে এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও ছেলের পাল্টাপাল্টি ও মিশ্র বক্তব্য পাওয়া গেছে। ছেলের দাবি, রাত একটার দিক থেকে মাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। আর স্বামীর দাবি, ভোরে ফরজ গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা গেছে নাছিমা।
আর নিহত ব্যক্তির চাচার ভাষ্য, বিয়ের পর থেকেই জামাই-মেয়ের সংসারে অশান্তি ছিল। পারিবারিক কলহের জেরেই মেয়েকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছে জামাই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মরা কালিগঙ্গা নদী থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে মহেদ আলী ও নাছিমা খাতুন দম্পতির বসবাস। এক ছেলে ও এক মেয়ে বিবাহিত। বুধবার সারাদিন তারা নদী থেকে কচুরিপানা পরিষ্কার করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা নাছিমার ভাসমান মরদেহ দেখে স্বজনদের খবর দেন। পরে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।
সরেজমিন দেখা যায়, মরা নদীর কিনারায় ভাসছে গৃহবধূ নাছিমার মরদেহটি। পাড়ে উৎসুক জনতার ভিড়। কাজ করছে পুলিশ।
এ সময় এক নারী বলেন, খবর শুনে এসে দেখি নদীত ভেসে আছে মরদেহ। কীভাবে মরেছে তা জানি না। তার ভাষ্য, পানিতে ডুবে মরলে তো এতো তাড়াতাড়ি ভাসার কথা নয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে নাছিমার স্বামী মহেদ আলী বলেন, বুধবার দু’জন মিলে নদীর কচুরিপানা পরিষ্কার করেছি। রাতে খেয়ে ১১টার দিকে ঘুমিয়েছি একসঙ্গে। কিছু না বলে ভোরে নদীতে ফরজ গোসল করতে গিয়ে আর ফেরেনি। তার ভাষ্য, রাতে কোনো ঝগড়া বা ঝামেলা হয়নি। গোসলে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে।
আর নাছিমার ছেলে রাজিব হোসেন প্রথমে বলেন, রাত একটা থেকে মাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজিও করা হয়েছিল। পরে সকালে জেলেরা খবর দিলে মরদেহ পেয়েছি। আবার পরে বলছে, কোনো ঝামেলা ছিল না। সকালে খেয়ে নদীতে গোসলে গিয়েছিল মা।
তবে নাছিমার চাচা ইসমাইল শেখ অভিযোগ করে বলেন, বাবা ছেলের কথার মিল নেই। ভাই-ভাবি বেঁচে নেই। বিয়ের পর থেকেই জামাই মেয়ের সংসারে অশান্তি ছিল। পারিবারিক কলহের জেরে মেয়েকে মেরে নদীতে ফেলে দিছে জামাই। তদন্ত করলেই সব বেরিয়ে আসবে।
কুমারখালী থানার ওসি খোন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে নদী থেকে এক নারীর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহজনক হওয়ায় সুরতহাল শেষে মরদেহটি মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে প্রকৃত ঘটনা পরে জানানো যাবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই