ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় কৃষকরা রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে চলতি মৌসুমে আমন ধান আবাদ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে কষকরা জমিতে হাল চাষ, সেচ পানি দিয়ে জমি প্রস্তুতসহ চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বোরো মৌসুমে ধানের ফলন ও বিক্রিতে ভাল দাম পাওয়ায় আগ্রহ নিয়ে আমন ধান আবাদে তারা মাঠে নেমে কাজ করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন আবাদে প্রায় ৪ হাজার ৪শ ১২ হেক্টর জমিতে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই মৌসুমে আমন ধান রোপণের জন্য উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে ৯শ জন কৃষককে ৫ কেজি বীজ ধান, ১০ কেজি এমওপি এবং ১০ কেজি ডিওপি সার প্রণোদনা দেওয়া হয়।
পৌর এলাকায় তারাগন, দেবগ্রাম, নারায়নপুর, উপজেলার হীরাপুর, বাউতলা, উমেদপুর, ধাতুরপহেলাসহ বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় কৃষকরা আমন ধান আবাদে জমি প্রস্তুত, চারা উত্তোলন ও রোপনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে আমন চাষ আবাদে শ্রমিক সংকট থাকায় মজুরিও বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুরপহেলা গ্রামের মোঃ মুর্শেদ মিয়া বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৩বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে। জমিতে হাল চাষ শেষ করে জমি প্রস্তুত করা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে চারা লাগানো শেষ হবে।
কৃষক মোঃ আলম মিয়া বলেন, এ মৌসুমে ৮ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করা হবে। ইতিমধ্যে ২ বিঘা জমি লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। বাকী জমিগুলো ট্রাক্টর দিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দিতে ৫শ টাকা দিতে হয়। জমিতে ধানের চারা লাগাতে মজুরি লাগছে ১৬শ থেকে ১৮শ টাকা। সব মিলিয়ে চাষাবাদে খরচ কয়েকগুন বেড়ে গেছে। উপজেলার মোগড়া এলাকার কৃষক মোঃ ফরিদ মিয়া বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ ও সার পেয়েছি। গত বোরো মৌসুমে ধান ১০ বিঘা জমি আবাদ করে ফলন ও বিক্রিতে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছি। তাই এবার ৭ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবাদ করা হবে। ইতিমধ্যে ২ বিঘা জমিতে চারা লাগানো হয়েছে। শ্রমিক সংকট থাকায় আগামী সপ্তাহের মধ্যে জমি প্রস্তুত করে ধান চারা লাগানো হবে। কৃষক মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, যেভাবে চালের দাম বাড়ে সে অনুযায়ী ধানের দাম বাড়ে না। ধান আবাদে খরচ তুলনামূলক অনেক বেড়েছে। এবার ৫ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ করা হবে। এরমধ্যে ২ বিঘাতে চারা রোপন শেষ হয়েছে। বাকী ৩ বিঘা নিচু এলাকায় হওয়ায় আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে প্রস্তুত করে আবাদ করতে। সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধান আবাদ করতে বেগ পেতে হয়নি।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ রানা বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান আবাদ শুরু হয়েছে। এ মৌসুমে সময় মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষকরা আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে। গত বোরো মৌসুমে ধানের ফলন ও বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক লাভবান হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম