হিমালয়ে অবস্থিত পৃথিবীর অষ্টম উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ মানাসলু অভিযানে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পর্বতারোহী তৌফিক আহমেদ তমাল। আগামী ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে নেপালের উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। ৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে তার মূল পর্বত অভিযান।
শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘অল্টিটিউড হান্টার বিডি’র আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। ‘মানাসলুর প্রকৃত শিখরে পৌঁছানোর প্রয়াস’ শিরোনামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তমালের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশের প্রথম নারী এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী নিশাত মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন পর্বতারোহণ প্রশিক্ষক ও চলচ্চিত্র গবেষক মীর শামছুল আলম বাবু, বাংলা ট্রেকার এক্সপ্লোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা নিজাম উদ্দিন, রোপ ৪ আউটডোর এডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা মহিউদ্দিন মাহি ও অল্টিটিউড হান্টার বিডির সভাপতি ফজলুর রহমান শামীম।
তমাল এরইমধ্যে ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে দেশের পাহাড়ে ট্রেকিং করছেন এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিয়মিত হিমালয়ের উচ্চতা অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। ভারতের নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে তিনি মৌলিক ও উচ্চতর পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ২০২৪ সালে সফলভাবে আরোহণ করেছেন বিশ্বের অন্যতম দুর্গম শৃঙ্গ মাউন্ট আমা দাবলাম। যাত্রা শুরুর ৪০ দিনের মধ্যে তমাল মানাসলুর সর্বোচ্চ শিখরে (৮,১৬৩ মিটার) দেশের পতাকা উড়াবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে নিশাত মজুমদার বলেন, নিজের আয় করা অর্থ দিয়ে তমাল তার স্বপ্ন পূরণ করতে যাচ্ছে। স্পন্সরের জন্য অপেক্ষা না করে এগিয়ে যাওয়া আমাদের সবার জন্য দৃষ্টান্ত। রাষ্ট্রেরও উচিত তরুণদের পাশে দাঁড়ানো। ভালো কাজে সহায়তা না পেলে তরুণরা ভুল পথে চলে যেতে পারে।
ফজলুর রহমান শামীম বলেন, এবারই তমালের এভারেস্ট অভিযানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্পন্সর না মেলায় সেটি পিছিয়ে দিয়ে নিজেদের সঞ্চিত অর্থে মানাসলু অভিযানের উদ্যোগ নিয়েছি।
নিজাম উদ্দিন বলেন, আমরা দেশ-বিদেশে অনেক শৃঙ্গ জয় করেছি। অথচ পৃষ্ঠপোষকতা পাই না। তমাল আমাদের পরিবারের সদস্য, সে সফল হোক, এটাই কামনা। মহিউদ্দিন মাহি প্রত্যাশা করেন, তমাল মানাসলু জয় করে সুস্থভাবে দেশে ফিরবেন।
সভাপতির বক্তব্যে মীর শামসুল আলম বাবু বলেন, বাংলাদেশের পতাকা একবার উড়েছে মানাসলুর চূড়ায়। আমরা চাই তমালের হাত ধরে আবারও সেটা উড়ুক। তবে এজন্য অর্থনৈতিক সহায়তা দরকার। স্পন্সর পেলে আমাদের সাফল্য আরও বহুগুণ বাড়তো।
তৌফিক আহমেদ তমাল বলেন, চাকরি করতাম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু পর্বতারোহণের স্বপ্ন পূরণ করতে চাকরি ছেড়েছি। সেই স্বপ্নের অংশ মানাসলু অভিযান।
প্রসঙ্গত, হিমালয়ের ৮ হাজার মিটার উঁচু ১৪টি পর্বতের একটি মানাসলু। উচ্চতা ৮ হাজার ১৬৩ মিটার। ১৯৫৬ সালের ৯ মে প্রথমবার এক জাপানি দল শৃঙ্গটি আরোহণ করে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই