বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) দীর্ঘদিন ধরে অকেজো থাকা ৯৫টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্র সচল করা হয়েছে। ন্যাশনাল ইলেকট্রো ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) থেকে আসা কারিগরি টিমের সহায়তায় চারদিনের অভিযানে যন্ত্রগুলো সচল হয়।
শনিবার (১৫ আগস্ট) যন্ত্র মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক একেএম মশিউল মুনীর। তিনি জানান, এনজিওগ্রাম, সিটি স্ক্যান, এক্সরে, লেসিক, ওসিটি, লিথোরিপটর, এন্ডোসকপিসহ আরও প্রায় ২০ ধরনের মেশিন সচল করার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পরিচালকের অনুরোধে গত সপ্তাহে নিমিউ অ্যান্ড টিসি থেকে ৫ সদস্যের কারিগরি টিম শেবাচিমে আসে। তারা বিভিন্ন মেশিন সরেজমিনে পরিদর্শন ও পরীক্ষানিরীক্ষা করেন। পরবর্তীতে হাসপাতালের নিজস্ব টেকনিশিয়ানদের পাশাপাশি আরও দুইজন টেকনিশিয়ানকে যুক্ত করে টিমটি মোট ৭ সদস্যে উন্নীত করা হয়। টিমটি রেডিওলজি ও ইমেজিং, প্যাথলজি, সিসিইউ, আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, চক্ষু, সার্জারি ও নাক-কান-গলা বিভাগের যন্ত্রপাতি মেরামতের কাজ করে।
কারিগরি টিমের সদস্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী (অপটিক্যাল) হাফিজুর রহমান বলেন, তারা ৬টি অ্যানেস্থেসিয়া মেশিন, ২৫টি সাকশন মেশিন, ১০টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর, ৫টি অটোক্লেভ, একটি সি-আর্ম মেশিন, দুইটি মনিটর, ৮টি ওটি টেবিল, ৫টি ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর, ১০টি হাই ফ্লো নাসাল ক্যানুলা, ৫টি আইসিইউ বেড, ৬টি ওটি লাইট, ৫টি ডেন্টাল ইউনিট, ২টি ডায়াথার্মি মেশিন, ৪টি ইসিজি মেশিন ও ১টি এক্সরে মেশিনসহ মোট ৯৫টি যন্ত্র সচল করতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ইকো, কার্ডিয়াক ডিফাইব্রিলেটর, কার্ডিয়াক মনিটর, ইসিজি ক্যাথল্যাব (এনজিওগ্রাম), সিটি স্ক্যান, চোখের লেসিক, ফ্যাকো, অপটিক্যাল কোহেরেন্স টমোগ্রাফি (ওসিটি), ইউরোলজি লিথোরিপটর, সি-আর্ম, ২টি এক্সরে ও এন্ডোস্কপির যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। দক্ষ টেকনোলজিস্ট ও জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে এসব মেশিন অকেজো অবস্থায় ছিল।
হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট মিথুন রায় বলেন, রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রসহ রেডিওলজি ও ইমেজিং, প্যাথলজি, সিসিইউ, আইসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, চক্ষু, সার্জারি ও নাক-কান-গলা বিভাগের প্রায় শতাধিক মেশিন সচল করা হয়েছে।
পরিচালক একেএম মশিউল মুনীর বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের অনেক মেশিন অকেজো অবস্থায় ছিল। সেগুলো মেরামত করে সচল করা হয়েছে এবং এখন রোগীদের সেবায় ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকিগুলো সচল করতে যন্ত্রাংশ আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মধ্যে একটি এমআরআই মেশিন, ক্যাথ ল্যাব ও সি-আর্ম মেশিন হাসপাতালে যুক্ত হবে।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক