ইলিশের মূল্য নির্ধারণের জন্য চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের পাঠানো প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন এবং প্রধান উপদেষ্টা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। ভোক্তা সাধারণ ইলিশের স্বাদ প্রত্যাশা করলেও ব্যবসায়ীরা জানান হতাশার কথা। তবে ইলিশ আহরণকৃত জেলাগুলোর জেলে, মৎস্যজীবী, আড়ৎদার, ক্রেতা ও ভোক্তাদের নিয়ে গঠিত তালিকা মূল্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের কথাও জানান জেলা প্রশাসক। জেলা মৎস্য কার্যালয়ের তথ্য মতে, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। দামও সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দাম নির্ধারণে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। এমনটাই প্রত্যাশা ভোক্তা সাধারণের।
ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। চাঁদপুরসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠিসহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমত ইলিশের দাম হাঁকিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা বাগিয়ে নেয়। ফলে স্থানীয় ক্রেতা সাধারণ বিনা চাষে উৎপাদিত রূপালি ইলিশ ক্রয় করা থেকে বঞ্চিত হয়। অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করেই ইলিশের দর স্বাভাবিক রাখার প্রত্যয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক। ইতিমধ্যে সেই চিঠির প্রস্তাাবনাটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া ইলিশের মূল্য নির্ধারণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তবে কোন পদ্ধতিতে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কোন প্রস্তাব এখনো আসেনি। সরকারের এমন পদক্ষেপে সাধারণ ক্রেতারা খুশি হলেও, দুশ্চিন্তায় আছেন ছোট-বড় আড়ৎদার ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী শাহজাহান বেপারী বলেন, ইলিশ আহরণ থেকে গদিতে তোলা পর্যন্ত বিভিন্ন (নৌকা, জাল, জেলেদের মজুরী, খাবার খরচ, জ্বালানী খরচ, বরফ খরচ) খরচ সরকারি মূল্য তালিকায় যুক্ত করা না হলে তারা ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার কথা বলেন। কাঁচামালের মূল্য নির্ধারণ করে হয় না।
ক্রেতা কামরুল হাসান বলেন, তবে সরকারের গ্রহীত যথাযথ পদক্ষেপে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। সেই সাথে দ্রুত ইলিশের স্বাদ নেয়ার জন্য মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এতে করে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের সাধারন ভোক্তারা ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবো।
চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক সবে বরাত সরকার বলেন, সরকার সারাদেশে ইলিশের একই দর নির্ধারণ করলে কোন প্রকার আপত্তি নেই বলেন। কাঁচামালের কখনো দাম নির্ধারণ করে হয় না। আমদানির উপর নির্ভর করেই ইলিশের দাম উঠানামা করে থাকে। তারপরেও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা এসে দেখুক বাস্তব চিত্র।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন বলেন, ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। এমনকি তিনি মূল্য নির্ধারণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ প্রদান করেছেন। তবে ইলিশ আহরণকৃত জেলাগুলোর জেলে, মৎস্যজীবী, আড়ৎদার, ক্রেতা ও ভোক্তাদের নিয়ে গঠিত তালিকা মূল্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের কথা জানান।
বিডি প্রতিদিন/এএ