চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভায় নেই নির্দিষ্ট কোন ডাম্পিং স্টেশন। এতে প্রতিদিন পৌর এলাকার ৫০/৬০ টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে সড়কের পাশে ও জলাশয়ের ধারে খোলা জায়গায়। ফলে মারাত্মক পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি পৌরবাসী চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। হাজীগঞ্জ পৌরসভাটি ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৪ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। পৌরসভার আয়তন ২০.২৪ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় এক লক্ষ পঁচিশ হাজার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ পৌর এলাকা ও আশপাশের হাটবাজার থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন প্রায় ৩০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে। সেই সাথে স্থানীয় বাসিন্দার বাসাবাড়ীর ফেলা অতিরিক্ত বর্জ্য মিলিয়ে দৈনিক বর্জ্যের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ টন। তবে দীর্ঘদিন ধরে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নেই কোন ডাম্পিং ষ্টেশন বা নির্দিষ্ট স্থান। ফলে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের মিঠানিয়া ব্রিজ এলাকায়, হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া ব্রিজের পাশে, হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কের রেলগেট এলাকায় এবং হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের উত্তর পাশেসহ বিভিন্ন স্থানে।
পৌরসভার পশ্চিম বাজারের বাসিন্দা নাছির হোসেন গাজী বলেন, পৌরসভার বর্জ্য খোলা জায়গায় ফেলার কারণে আশপাশে দুর্গন্ধ, ধোঁয়া ও মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। বর্জ্য ধ্বংসের জন্য জ্বালানো আগুন ও ধোঁয়ার কারণে শিশু-বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বাতাস আসলে দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ায় বাড়িতে টিকে থাকা দায়। অনেকেই শ্বাসকষ্ট সহ নানা রোগে ভুগছে। কিন্তু সমস্যা সমাধানে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
সিএনজি চালক মমিন খান বলেন, হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় উৎকট গন্ধে চালক-যাত্রী সকলেরই দম বন্ধ হয়ে আসে। এসব ময়লাতে আগুন লাগালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাতাসের সাথে ধোঁয়া উড়তে থাকে।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) মাহবুবুর রশীদ বলেন, পৌরসভার নিজস্ব কোনো জমি নেই, ফলে ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। সাবেক পৌর মেয়ররা যেসব জায়গায় বর্জ্য ফেলেছেন, আমরাও সেখানেই ফেলে যাচ্ছি।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো: ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, বর্জ্য ফেলার জন্য বিকল্প জায়গা খোঁজা হচ্ছে। ময়লার স্তুপ অপসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্থায়ী সমাধানে পৌরবাসীর সচেতনতা ও সহায়তা প্রয়োজন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল